ভারতকে পরীক্ষিত বন্ধু বলেছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, একাত্তরে ভারতের মানুষ আমাদের এক কোটিরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল, আমাদের কঠিন সময়ে ভারত আমাদের পাশে থেকেছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনা তাদের প্রাণ দিয়েছিল। এটা আমরা ভুলতে পারবো না।
মন্ত্রীর সম্মানে বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশন প্রাঙ্গণে এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের আয়োজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে অনেকদিনের সংশয় ছিল, অবিশ্বাস ছিল, সেটা মোদি সরকারের আমলে ভেঙে গেছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আছে বলেই আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্র সমস্যা মিটেছে, ৬৮ বছরের ছিটমহল চুক্তির সমাধান হয়েছে এবং এক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদির যথেষ্ট অবদান ছিল। ভারতের ইউপিএ সরকারের আমলেও ছিটমহলের বাস্তবায়ন নিয়ে একটা প্রক্রিয়া চালু ছিল, কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সরকার আসে তাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বাংলাদেশ ও ভারত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবে বলেও জানান তিনি।
ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ভূমিকা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন ‘আমাদের দুই বাংলার মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি সবই এক। এখানে এসে মনে হয় না যে, অন্য কোন দেশে আছি।’।
তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে মন্ত্রী বলেন ‘এব্যাপারে আলাপ আলোচনা চলছে। মোদি সরকারের ঢাকা সফরেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিস্তার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলেন, আমরাও সেদিকে আশা করে আছি। আমরা অতিরিক্ত কিছু চাই না। আমরা চাই এব্যাপারে গ্রহণযোগ্য যুক্তিসম্মত, বাস্তবসম্মত একটা সমাধান’।
গত এপ্রিলে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকালে মমতা ব্যানার্জি তিস্তার পানির বদলে তোর্সা সহ অন্য কয়েকটি নদীর পানি বন্টনের বিষয়ে যে প্রস্তাব বাংলাদেশকে দিয়েছিলেন সে প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন ‘এটা তাঁর (মমতা) অভিমত, এটা তার সরকারের বক্তব্য। আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা করছি। চুক্তি হবে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে। এই বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারই সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সঙ্গে বুঝবে’।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সৈযদ মোয়াজ্জেম আলি, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শমি কায়সার, চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, কলকাতা বুক সেলার্স এন্ড পাবলিশার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক শুখরঞ্জন দাসগুপ্ত, মানস ঘোষ, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, ইমানুল হক, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সুরঞ্জন দাসগুপ্ত, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির সম্পাদক অজয় দে ও সহকারী সম্পাদক গৌর গোপাল সাহা সহ সমাজের বিশিষ্টজনেরা।
বিডি প্রতিদিন/২১ ডিসেম্বর ২০১৭/ওয়াসিফ