এই রোদ, আবার এই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। এরপরও ঈদের আগে শেষ রবিবারে কেনাকাটার আনন্দকে তা মাটি করতে পারেনি। সবকিছু উপেক্ষা করেই ঈদের কেনাকাটায় মেতে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহর কলকাতা। নিউমার্কেট থেকে শুরু করে বিগ বাজার, কোয়েস্ট মল, সিটি মার্ট, মেট্রো প্লাজা-কলকাতা শহরের নামকরা শপিং মলগুলি-সব জায়গাতেই শেষ মুহূর্তের কেনার ব্যস্ততা।
রবিবার বিকালে বৃষ্টি শুরু হতেই ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মনেই আশঙ্কা জন্মেছিল-আজকের দিনটা হয়তো মাটি হয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু সেই বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। একটু পরে বৃষ্টি থামতেই ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মুখে চওড়া হাসি।
মোহম্মদ আব্বাস আলি নামে এক ব্যবসায়ী জানান, ‘বছরের এই সময়টাতে দৈনিক কয়েক হাজার রুপির কেনাবেচা হয়। ফলে ব্যবসার জন্য এটা আমাদের কাছে সেরা সময়। বৃষ্টির কারণে একদিন ব্যবসা চালাতে না পারলে প্রচুর ক্ষতি হয়। আমরা ভাবছিলাম যে আজ হয়তো ব্যবসা হয়তো মন্দা যাবে, কিন্তু ভাগ্য ভাল যে আবহাওয়া পরিষ্কার হয়ে গেছে’।
আকাশ পরিষ্কার হতেই কেনাকাটায় ঢল নামে ক্রেতাদেরও। যতদূর চোখ যায় কেবল কালো মাথার সারি। কলকাতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতেও চলেছে ঈদের কেনাকাটার পর্ব। রোদ-বৃষ্টির খেলায় সকালের দিকে ভিড় কম থাকলেও বেলা একটু বাড়তেই বাজারগুলিতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
ঈদের কেনাকাটা করতে কলকাতার স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকেও অনেকে কলকাতায় এসেছেন কেনাকাটা সারতে।
পরিবার নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন রুনু। মিলন গার্মেন্টেস’এ পোশাক কিনতে কিনতেই তিনি জানান, ‘ঈদে কেনাকাটা সবসময়ই অন্যরকম অনুভূতি। পরিবারের প্রত্যেকের জন্যই পোশাকসহ অন্য জিনিস কেনা হবে’। পণ্যে বৈচিত্রতা ও দাম নাগালের মধ্যে থাকার কারণেই নিজের দেশ ছেড়ে কলকাতায় ছুটে আসা বলেও জানান তিনি।
ঢাকার লালবাগ থেকে কলকাতায় কেনাকাটা করতে আসা মহম্মদ ফারহাদ জানান ‘এখানে এসে অন্য শহর বলে মনে হচ্ছে না, কারণ বাংলাদেশের মানুষই এখানে বেশি। তাঁর অভিমত দাম ও পণ্যের গুণমানের কারণেই বাংলাদেশের অনেক মানুষ কলকাতায় চলে আসেন কেনাকাটা করতে।
নিউমার্কেটের প্রখ্যাত বস্ত্র বিপণী ‘মিলন’এর কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ পাল চৌধুরী জানান, ‘ঈদ উপলক্ষ্যে আমাদের দোকানে বাংলাদেশি ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। আসলে প্রতিটি ক্রেতাই প্রথম দেখাতেই তাদের মনের মতো জিনিস পেয়ে যায় বলেই তারা এখানে আসেন। তাছাড়া পণ্যের জোগানও অনেক বেশি। এখানে বুটিকের পাশাপাশি মিলনের নিজস্ব কিছু পণ্য আছে’।
পোশাকের দোকানের পাশাপাশি খাবারের দোকান গুলিতেও অসম্ভব ভিড়। কেনাকাটার মাঝেই রোজা শেষে ইফতার সেরে নিচ্ছেন মুসলিম ধর্মালম্বী মানুষেরা। ইফতার শেষ হতেই আবার শুরু হচ্ছে কেনাকাটার পর্ব।
বিডি-প্রতিদিন/১০ জুন, ২০১৮/মাহবুব