ভারতীয় সমুদ্র সীমানায় ঢুকে পড়ার অভিযোগে ২০ জন বাংলাদেশি মৎসজীবীকে আটক করেছে ওড়িষ্যার পারাদ্বীপ মেরিন পুলিশ। রবিবার নেহরু বাংলোর কাছে পারাদ্বীপের সমুদ্র বন্দরের কাছে একটি মাছ ধরার ট্রলারে ওই বাংলাদেশি মৎসজীবীদের দেখতে পায় স্থানীয় এক মসৎসজীবী। এরপরই পারাদ্বীপ মেরিন পুলিশে খবর দিলে সেখানে যৌথভাবে তল্লাশি চালায় পারাদ্বীপ মেরিন পুলিশ ও ভারতীয় কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। এরপর তাদের পারাদ্বীপ মেরিন পুলিশ থানায় নিয়ে আসা হয়।
তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে জেরায় বাংলাদেশি মৎসজীবীরা জানায়, মাছ ধরার উদ্দেশ্যে গত ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ভোলা থেকে তারা বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মাঝ সমুদ্রে বিচরণ করার সময় গত ১১ ডিসেম্বর তাদের ট্রলারটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। একসময় ট্রলারটি তার স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ করে দেয় এবং সমুদ্রের পানিতে ভাসতে ভাসতে সেটি ভারতীয় সীমানার (ওড়িষ্যা) মধ্যে ঢুকে পড়ে। এরপর তারা স্থানীয় এক মৎসজীবীর সহায়তা চায়, সেইসাথে বাংলাদেশে অবস্থান করা বাংলাদেশি ট্রলারের মালিকের সাথেও যোগাযোগ করে। কিন্ত বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও ট্রলারের মালিকের পক্ষ থেকে কোনো সদুত্তর না মেলায় তাদেরকে উদ্ধারের বার্তা পাঠানো হয়। এরপরই মাঝ সমুদ্রে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের উদ্ধার করে পারাদ্বীপ বন্দরে নিয়ে আসা হয়।
পরে ওই ২০ জন বাংলাদেশি মৎসজীবীকে আটক দেখিয়ে জব্দ করা হয় ট্রলারটিকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১৫টি মোবাইল ফোন, বাংলাদেশি কিছু নথি। পরে আটককৃত মৎসজীবীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়, সেইসাথে শুকনো খাবারও সরবরাহ করা হয়।
পারাদ্বীপের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিমাই চরণ সেঠি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘রবিবার গভীর সমুদ্রে ওই ২০ জন বাংলাদেশি আটকা পড়ে। এরপর বোটের সাহায্যে তাদের উদ্ধার করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের সত্যতা জানতে তাদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে ১৫ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা।
তবে কোন অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশি মৎসজীবীরা ভারতীয় সীমানায় ঢুকে পড়েছিল কি না তা জানতে সোমবারই ভারতীয় নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, কাস্টমস এবং পারাদ্বীপ মেরিন পুলিশ যৌথভাবে একটি তদন্ত শুরু করবে বলে জানা গেছে। ওই ট্রলারটিতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি আছে কি না তাও পরীক্ষা করে দেখবে ভারতীয় প্রকৌশলীদের একটি প্রতিনিধি দল। সেক্ষেত্রে কোন ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি প্রমাণিত হলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ মিশনের সাথে যোগাযোগ করে ওই বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।
অন্যথায় পারাদ্বীপ মেরিন পুলিশের তরফে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হবে। সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল