ভালুকার হাতিবের গ্রাম এখন কুমির বিপ্লবের গ্রাম। এই গ্রামে কুমিরের চাষ হচ্ছে। আর সেই কুমিরের মাংস, চামড়া, দাঁত, হাড় ইত্যাদি বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুুদ্রা আয়ের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
ভালুকা উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে শালবনের ভিতর উথুরা ইউনিয়নের হাতিবের গ্রাম। এখানেই গড়ে তোলা হয়েছে কুমিরের বিরাট খামার। এ প্রকল্পের উদ্যোক্তা ‘রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড’। খামারের জন্য ২০০৪ সালের ২২ ডিসেম্বর মালয়েশিয়া থেকে সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে আনা হয় ৭৫টি কুমির। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৭৫টি কুমিরের মধ্যে পুরুষ কুমির ছিল ১৩টি। আনার পরের দিনই বিশেষভাবে তৈরি পুকুরে ছেড়ে দেওয়া হয় এগুলো। ২০০৬ সালের আগস্টে দুটি কুমির প্রথম ডিম দেয়। প্রথম বছরে ডিম ও বাচ্চার সংখ্যা কম হলেও ক্রমশ বাড়তে থাকে। বর্তমানে এ খামারে ছোট-বড় মিলিয়ে ১ হাজার ৪০০ কুমির রয়েছে। শুরুতে খামারের আয়তন ১৪ একর হলেও এখন তা গিয়ে ঠেকেছে ২১ একরে। ২০১৩ সালে আমদানি করা হয় আরও ২১টি বড় কুমির। অবশ্য ২০১২ সাল পর্যন্ত ১০টি কুমির বিভিন্ন কারণে মারাও যায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২১টি পুরুষ কুমির আর ৬৪টি মাদি কুমির নিয়ে বর্তমানে এ খামারে বড় কুমিরের সংখ্যা ৮৫টি। তাদের জন্য রয়েছে ৪০টি পুকুর। রপ্তানিযোগ্য কুমিরের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় তৈরি করা হয়েছে ৬০০টি আলাদা পুকুর। এ খামারকে ঘিরে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে কুমির চাষের পাশাপাশি এ খামার এলাকায় ৫ হাজার ফলদ ও বনজ গাছের সমন্বয়ে ছায়াঘেরা নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যানুযায়ী, কুমিরের কোনো কিছুই ফেলনা নয়। রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড আগে শুধু কুমির রপ্তানিতে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখলেও এখন কুমিরের চামড়াও যাচ্ছে বিদেশে। গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৪৩০টি কুমিরের চামড়া জাপানে রপ্তানি করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভবিষ্যতে রপ্তানির অপেক্ষায় রয়েছে মাংস, দাঁত ও হাড়। জাপান, চীন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসব চড়া দামে বিক্রি হয়। সেখানে প্রায় ৭০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যমানের কুমিরের মাংসের চাহিদা রয়েছে। ফলে দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমির চাষে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে। বিশেষ করে আগামী ৩ বছরে কমপক্ষে ২ হাজার কুমির এবং ৫ বছরের মধ্যে চার হাজার কুমিরের চামড়া রপ্তানির টার্গেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে খামার কর্তৃপক্ষ। খামারের ম্যানেজার আবু সায়েম মোহাম্মদ আরিফ জানান, ২০১০ সালে জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য এ খামার থেকে ৬৭টি কুমির রপ্তানি করা হয়। এর মাধ্যমে প্রথম রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় নাম ওঠায় বাংলাদেশ। পরে ২০১৩ সালে ৫টি কুমির বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে দর্শনার্থীদের জন্য দেওয়া হয়। কারিগরি সহায়তা এবং অবকাঠামোগত সুবিধা পেলে বাংলাদেশের কুমির মালয়েশিয়া, জাপান, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশের বাজার দখল করতে পারবে। প্রকল্পের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব সোম জানান, চলতি বছর কুমিরের মাংস ড্রাইফিড হিসেবে বিক্রি করা হবে। আগামী বছরগুলোতে প্রশাসনিক যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তা বিদেশে রপ্তানি করা হবে। কুমিরের হাড় ও মাংস দুটোই রপ্তানি করা হবে। তিনি বলেন, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমির চাষে আমাদের এ খামার সম্ভাবনার সিংহ দুয়ার খুলে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতির ভিত মজবুতে এটি সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।
শিরোনাম
- শহীদদের স্মরণে ছাত্রদলের সমাবেশে বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান
- চার বিভাগে অতিভারি বর্ষণের শঙ্কা
- ইউক্রেনে এক মাসে ছয় হাজারের বেশি ড্রোন হামলা রাশিয়ার
- ভয়াবহ ট্র্যাজেডির ১২ দিন পর ক্লাসে ফিরেছে মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা
- পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতেই বড় উত্থান
- জলাবদ্ধতা নিরসনে ঝিনাইদহ উন্নয়ন কমিটির মানববন্ধন
- কুমারখালীতে আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতা, চ্যাম্পিয়ন ভারতের রচিশনু দত্ত
- হাসিনার বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য চলছে, বিচার সরাসরি সম্প্রচার
- ইসরায়েলকে কোনও অস্ত্র সরবরাহ নয়, নিশ্চিত করল কানাডা
- গৃহকর্মীকে ধর্ষণ, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাতির যাবজ্জীবন
- কর্মদিবসে সমাবেশ; রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজট
- যেভাবে ভারতের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ‘রাফাল’ ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান
- আমিরাতে তীব্র তাপপ্রবাহ, স্বাস্থ্য ঝুঁকি সতর্কতা
- ইন্ডিগো ফ্লাইটে সহযাত্রীকে চড়, আজীবন নিষিদ্ধ যাত্রী
- আলোচনার কেন্দ্রে জুলাই ঘোষণা
- হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ড. ইউনূস একটি কথাও বলেননি
- আবারও তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, নিম্নাঞ্চলে প্লাবন
- তিন স্থানে ব্যাপক চাঁদাবাজি, মাসে দুই কোটি টাকা আদায়
- শিশুদের জন্য এআই একাডেমি তৈরি করল ১০ বছরের মেয়ে
- ‘পাগলু’ নাটকে জুটি বাঁধলেন মোশাররফ-সাফা
সম্ভাবনার বাংলাদেশ
ময়মনসিংহের কুমির সাম্রাজ্য
সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর