সীমান্ত অপরাধ ঠেকাতে এবং ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানা (আইবি বা ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার) থেকে ১৫০ গজ দূরে কাঁটাতারের যে তিন সারিবিশিষ্ট বেড়া রয়েছে তার আগে আরেকটি বেড়া নির্মাণ করা হচ্ছে। সীমান্ত পাড়ের প্রায় ২৫০ গ্রামের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই আন্তর্জাতিক সীমানা ও বর্তমান কাঁটাতারের বেড়ার মধ্যেই ভারতের দিকে নতুন করে এই বেড়াটি নির্মাণ করা হবে। এ ব্যাপারে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবি একমত হয়েছে। মঙ্গলবার দিল্লিতে দুই বাহিনীর ডিজি পর্যায়ের বৈঠকের শেষ দিনে এ বিষয়টি জানানো হয়। বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে যৌথ রেকর্ড স্বাক্ষরের পর একথা জানান বিএসএফ ডিজি কে. কে. শর্মা। পাহাড়, নদী ও দুর্গম অঞ্চলে এক সারিবিশিষ্ট এবং স্থলভূমিতে দুই সারিবিশিষ্ট এই বেড়া তৈরি হবে। শর্মা বলেন ‘১৪৮টি গ্রাম আছে যেগুলো কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে, ১৩৭টি গ্রাম রয়েছে যেগুলোর কিছুটা অংশ কাঁটাতারের বাইরে অবস্থিত। এই গ্রামগুলো যেহেতু আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং কাঁটাতারের বেড়ার মধ্যে অবস্থিত, সেই কারণে এই অংশে পাচারসহ অন্যান্য সীমান্ত নাশকতা সংঘটিত হয়।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত (আইবি)-এর ১৫০ গজের মধ্যে কোনো রকম প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত অবকাঠামো নির্মাণ করা যায় না। কিন্তু এবার আইবির ১৫০ গজের মধ্যেই এই নতুন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হচ্ছে।
আজিজ আহমেদ জানান, ‘আমরা নিশ্চিত করব যে, নতুন করে বেড়া তৈরি হলে আমাদের তরফে কোনো আপত্তি না আসে। মানবিকতার দিকটিতে আমাদের নজর দেওয়া দরকার এবং নতুন করে বেড়া দেওয়া যেতেই পারে। কারণ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এই মুহূর্তে যে সম্পর্ক রয়েছে তা গোটা বিশ্বের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।৪৩তম বৈঠকে ভারতের বিএসএফের শীর্ষ কর্মকর্তারা ছাড়াও ভারতের স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত এজেন্সি এবং জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে গরু পাচার, জাল নোট পাচার রোধ নিয়েও আলোচনা হয় দুই বাহিনীর মধ্যে।
বিজিবি ডিজি জানান, গরু পাচার ঠেকাতে দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে অনেক তথ্য বিনিময় হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, মিজোরাম, আসাম ও ত্রিপুরা এই পাঁচ রাজ্যের মোট সীমান্তের পরিমাণ ৪০৯৬ কিলোমিটার।