শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বরিশালে দীপাবলি উৎসব শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে দীপাবলি উৎসব শুরু

বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে প্রিয়জনের সমাধিতে দীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনা করছেন স্বজনরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বরিশালে শুরু হয়েছে ভারত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশান দীপাবলি উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারও ভূত চতুর্দশীর পুণ্যতিথিতে অর্থাৎ গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটে এ উৎসব শুরু হয়। দুই দিনব্যাপী উৎসব শেষ হবে আজ রাত ৮টা ২৮ মিনিটে। এরপর রাতে অনুষ্ঠিত হবে শ্মশান কালীপূজা। উৎসবে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বজনরা এখানে ছুটে এসেছেন প্রিয়জনের আত্মার শান্তি কামনায়। এদিকে, ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবে তোরণ নির্মাণ ও ব্যাপক আলোকসজ্জা করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে ১৬টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। অন্যদিকে এ উৎসব নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থার কথা জানিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। বরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় ২০০ বছর আগে ৫ একর ৯৫ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় মহাশ্মশান। এ শ্মশানে ৩০ হাজার পাকাসহ মোট সমাধি রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। প্রয়াতদের স্বজন যারা বরিশালসহ সারা দেশে তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করেন তারা এই দিনে সমাধির পাশে এসে প্রদীপ প্রজ্বালন করে প্রার্থনা করেন তাদের আত্মার শান্তি কামনায়। কেউ কেউ প্রয়াতের পছন্দের খাবার এনে রাখেন সমাধির পাশে। আবার কেউ পাঠ করেন গীতা। প্রার্থনা করে অনেক স্বজন প্রয়াতের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও এসেছে প্রিয় প্রয়াতের জন্য প্রার্থনা করতে। বাবা-মায়ের সমাধির পাশে প্রার্থনারত সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘দীপাবলি অর্থ হচ্ছে আলোময়। সব সমাধিতে আলো জ্বালিয়ে প্রার্থনা ও দীপাবলির সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হয় শ্মশান দীপাবলি উৎসব।’ তিনি প্রতি বছর এই দিনে মহাশ্মশানে প্রিয়জনের আত্মার শান্তি কামনা করেন। এতে মনের তৃপ্তি লাভ হয়। বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুডু বলেন, ‘দীপাবলি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উৎসব হলেও খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, মুসলিমসহ সব ধর্মবর্ণের হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে মহাশ্মশানে। এটি এখন সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ কারণে পুরো এলাকাটি পরিণত হয় মিলনমেলায়। এদিকে, দুই দিনব্যাপী উৎসব নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে এবার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমীন। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় মহাশ্মশানের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে ১৬টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে মহাশ্মশানের এক পাশে আয়োজন করা হয়েছে মেলার। মেলায় হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজানো হয়েছে। এ ছাড়া নাগরদোলা, চরকাসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা।

সর্বশেষ খবর