কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে আশা-উদ্যম সৃষ্টি হওয়ায় আশপাশের জমিজমার দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। স্থানীয়দের ধারণা, অল্প কিছু দিনের মধ্যে কারাগার অঞ্চলটি গ্রাম থেকে পুরোপুরি একটি নগরে পরিণত হতে পারে। তা ছাড়া নির্মাণের পরই কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে দিয়ে যাওয়া সড়কটি সরাসরি পদ্মা সেতুর সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এজন্য এলাকাটির গুরুত্ব আরও বেশি। কারাগারের পশ্চিম-পূর্ব উভয় দিকে বালু দিয়ে অনাবাদি জমি ভরাটের কাজ চলছে। গড়ে উঠেছে আবাসন প্রকল্প। যে কারণে রাজেন্দ্রপুর বাজার থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশ আগের চেয়ে জমজমাট হয়ে উঠছে। সে এলাকার পরিবেশ দেখে মনে হবে বাড়িঘর, দোকানপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ার পরিকল্পনা এখনই নিচ্ছেন সচেতন নাগরিকরা। আবদুল লতিফ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, আগে সন্ধ্যা নামতেই কারাগারের সামনে দিয়ে যাওয়া সড়কটি ভুতুড়ে হয়ে যেত। এমন দিন কমই ছিল যেদিন ছিনতাইয়ের ঘটনা থাকত না। এখনো মাঝে মাঝে ঘটে। আগের তুলনায় লোক চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সেসব অনেকটা কমে গেছে। ঢাকার বিভিন্ন লোক এসে বাড়ি করার জায়গাজমি কিনছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী নগর করতে আবাসন প্রকল্পও গড়ে তোলা হচ্ছে। কারাসূত্র জানায়, ভারতের আলীপুর কারাগারের আদলে কেরানীগঞ্জে ১৯৪.৪১ একর জমির ওপর তিনটি কারাগার ও ২০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তিনটির মধ্যে একটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ায় তা গত বছরের ১০ এপ্রিল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২৯ জুলাই বন্দী ও স্টাফদের নিয়ে আসা হয়। এ কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা ৪ হাজার ৫৯০ জন। আর আটক আছেন প্রায় সাড়ে ৭ হাজার জন। কারাগার চালুর পর জমে ওঠে এলাকাটি। এরই মধ্যে কারাগারের পূর্ব দিকে ‘স্বপ্নপুরী দেব মন্দির’ নামে একটি উপাসনালয়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আর তার পাশঘেঁষা দক্ষিণমুখী রাস্তাটির দুই পাশ ভরাট করে প্লট করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা সংঘবদ্ধ হয়ে এসব প্লট কিনেছেন যা দু-তিন বছরের মধ্যে বাড়িঘরে পরিণত হওয়ার কথা। মহসিন নামের এক চা দোকানি জানান, এলাকাটি একটু নিচু। এর আশপাশে ১০-১৫ বছর আগে প্রায় ১৫টির মতো ইটভাটা গড়ে ওঠে। ভাটাগুলো এখনো কাজ করে চলছে। এ ছাড়া আর তেমন কিছু ছিল না। কারা ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর আগে স্থানীয় জমির দাম শতাংশপ্রতি ছিল ২-৩ লাখ টাকা। এখন একই জমির দাম প্রতি শতাংশ হয়েছে ১০ লাখ টাকা। পোস্তগোলার বুড়িগঙ্গার প্রথম সেতু পার হয়ে এক রাস্তা ধরে যাওয়া যায় নতুন কারাগারে। সেখানে যেতে নসিমনে ভাড়া প্রতি জনে ১৫ টাকা। আর সিএনজিতে ২০ টাকা। আল আমিন নামে এক সিএনজি চালক এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘কারাগার চালুর আগে এ রোডে আমরা রিজার্ভ ছাড়া সিএনজি নিয়ে যাইতাম না। আর এখন লোকাল হিসেবে যাত্রীপ্রতি ২০ টাকা নিয়ে যাই। এই সড়কে প্রায় অর্ধশত সিএনজি চলাচল করে। প্রতিনিয়ত এ সড়কে বিভিন্ন বন্দীর আত্মীয়স্বজন আসা-যাওয়া করে। যার জন্য প্রত্যেক সিএনজি চালক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে।’ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন কারা ফটকের সামনের হোটেল ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দোকানের সামনে দিয়ে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে। দুই লেনের রাস্তাটিতে গাড়িও থাকে অনেক। ধুলাবালি আর ছোট ছোট গাড়ির দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা থাকে অনেক।’ কারাগার চালু হওয়ার পর তিনি এবং পাঁচ-ছয় জন সেখানে খাবারের দোকান খুলে বসেছেন। প্রতিদিন অসংখ্য লোকের আনাগোনা থাকায় দোকানগুলোয় বিক্রিও ভালো। কারা ফটকের সামনে অপেক্ষমাণ বন্দীর এক স্বজন জানান, তিনি মিরপুর থেকে এসেছেন। এখানে আগে কখনো আসেননি। আশপাশের পরিবেশটা অনেকটা গ্রামের মতো। কাজকর্মের যে উদ্যম চলছে তাতে মনে হয় গ্রাম-গ্রাম ভাব বেশি দিন থাকবে না। অচিরেই ঢাকার মতো কোলাহলময় হয়ে যাবে।
শিরোনাম
- স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বল ‘আফগান তালেবানের কোর্টে’: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
- যুক্তরাজ্যে অভিবাসনে ভাষাগত দক্ষতার নতুন নিয়ম
- নির্বাচনের প্রস্তুতি : ছুটির দিনেও ইসি কর্মকর্তাদের অফিস করার নির্দেশ
- জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপির
- নেত্রকোনায় প্রধান শিক্ষকের রহস্যজনক মৃত্যু, স্ত্রী গ্রেফতার
- টাঙ্গাইলে পিকআপ ভ্যান-মাহিন্দ্রা সংঘর্ষে নিহত ২
- ধর্ম অবমাননা কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষের ফল
- ভালো নির্বাচনের পথে যত বাধা
- যেভাবে মিলবে একীভূত পাঁচ ব্যাংকের আমানত
- লাখো মানুষের হাতে মশাল, ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তাল উত্তরাঞ্চল
- চাকসুতে বিজয়ীদের সংবর্ধনা দিলেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক
- বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে ইরাক
- জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
- জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানাল ঐকমত্য কমিশন
- এআই দিয়ে কিভাবে দ্রুত ও প্রফেশনালি সিভি বানাবেন
- জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হলেন হানিয়া আমির
- বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন আহমেদের রাষ্ট্রীয় ফিউনারেল প্যারেড অনুষ্ঠিত
- আরও ৩০ ফিলিস্তিনির নিথর দেহ ফেরত দিল ইসরায়েল
- কপিল শর্মার ক্যাফেতে ফের গুলিবর্ষণ, নিশানায় ‘সালমানের শত্রু’ গ্যাং
- ইসরায়েলি হামলায় হুথির সামরিক প্রধান নিহত
নতুন শহর হচ্ছে কেরানীগঞ্জে
কারাগার এলাকা ঘিরে বিশাল কর্মযজ্ঞ বাড়ছে জমির দাম
মাহবুব মমতাজী
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বল ‘আফগান তালেবানের কোর্টে’: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
৮ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

লাখো মানুষের হাতে মশাল, ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তাল উত্তরাঞ্চল
৬ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম