শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
বর্বরতা

শিশু গৃহকর্মীর শরীরে ফুটন্ত পানি

সঞ্জিত সাহা, নরসিংদী

নরসিংদীতে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দেওয়ায় মণি আক্তার (১১) নামে এক শিশু গৃহপরিচারিকার মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্যের জোগান দিতে না পাড়ায় যন্ত্রণা নিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত ছটফট করে কাটাচ্ছে শিশুটি। নরসিংদী শহরের টাউন হল এলাকায় জনতা ব্যাংকে কর্মরত হাসান সারোয়ার সোহেলের   বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মণির বাবা বাদী হয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী মাহমুদা ইয়াসমিন নাজমার নামে সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন। মণি আক্তার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার রিকশাচালক আবদুল আজিজের মেয়ে। তারা পৌরশহরের দাশপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। পুলিশ ও নির্যাতিতার পরিবার জানায়, দেড় মাস আগে হাসান সারোয়ার সোহেলের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ নেয় মণি। এর মধ্যে ১৭ জানুয়ারি রাতে বড় একটি পাত্রে গরম পানি ফুটাতে বলেন গৃহকর্ত্রী নাজমা। আধঘণ্টা পর পানি গরম হয়ে গেলে ফুটন্ত পানির ডেগ চুলা থেকে নামানোর নির্দেশ দেন। অনেক ভারী বিধায় মণি নামাতে না পেরে গৃহকর্ত্রীকে নামাতে বলেন। এতে নাজমা মণির ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে বকাঝকা শুরু করেন। পরে মণির শরীরে গরম পানি ঢেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে মণির মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে গৃহস্বামী মণিকে চিকিৎসা না করিয়ে লোকমারফত বাড়ি পাঠিয়ে দেন। একই সঙ্গে কাউকে কিছু জানাতে বারণ করে দেওয়া হয়। পুলিশ বা অন্য কাউকে কিছু জানালে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেন। আজিজের প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে মণিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। ১০ দিন ধরে মণি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে। বুধবার রাতে রাসেল সরকার নামে একজন ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি তুলে ধরলে সব মহলে হৈচৈ পড়ে যায়।

সর্বশেষ খবর