বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বিপন্ন ‘চিতা বিড়াল’

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

বিপন্ন ‘চিতা বিড়াল’

দূর থেকে দেখলে মনে হবে চিতা বাঘ। ভয়ে কেঁপে উঠবে বুক। কিন্তু না, কাছে গেলে সব ভয় দূর হয়ে যাবে। আসলে ওটা চিতা বাঘ নয়, চিতা বিড়াল। দেখতে অনেকটা চিতা বাঘের মতোই। গায়ে হলুদের ওপর কালো রঙের ছাপ। দেহের তলে সাদা রঙের ওপর হালকা বাদামি ফোঁটা রয়েছে। চিতা বিড়ালের ইংরেজি নাম Leopard cat আর বৈজ্ঞানিক নাম Prionailurus bengalensis. এরা ফেলেডি পরিবারের সদস্য। আকারে ছোট পোষা বিড়ালের মতো একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এর ‘রেডলিস্ট’ তালিকায় চিতা বিড়ালকে ‘বিপদাপন্ন’ প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আর বাংলাদেশে ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এদেরকে সংরক্ষিত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়ে শ্রীমঙ্গলের শৌখিন ফটো গ্রাফার খোকন থৌনাউজম এই বিপন্ন প্রাণীর দেখা পান। খোকন  থৌনাউজম বলেন, এরা খুব দুরন্ত প্রাণী। মানুষের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই পালিয়ে যায় তাই এদের ছবি ধারণ করাও বেশ কঠিন। জানা যায়, চিতা বিড়াল আকারে ছোট ও পোষা বিড়ালের সমান হলেও এদের পা দীর্ঘ। পুরুষ ও স্ত্রী এবং মেয়ে  বিড়ালের মধ্যে চেহারার ভিন্নতা পাওয়া যায়। ওজন পুরুষের তুলনায় স্ত্রীদের বেশি হয়। এদের খাদ্য তালিকায় প্রধান খাবারের মধ্যে রয়েছে ইঁদুর, খরগোস, বনমোরগ, হাঁস, মোরগ, ব্যাঙ প্রভৃতি। সন্ধ্যার আলো নেমে এলে তারা খাবারের সন্ধানে বের হয়। আর দিনের আলোয় লুকিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, চীন, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, রাশিয়া, কোরিয়ায় এদের দেখা পাওয়া যায়। আমাদের দেশের চিতা বিড়ালদের সারা বছরই প্রজনন সময়। এরা একসঙ্গে দুই থেকে তিনটি করে বাচ্চা দিয়ে থাকে। সৌল (সেভ আওয়ার আনপ্রোটেক্টের লাইফ)-এর নির্বাহী পরিচালক তানিয়া খান বলেন, এক সময় বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে চিতা বিড়াল দেখা যেত। এরা বনাঞ্চলে থাকে। কিন্তু দিনে দিনে বন ও প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশে এই প্রাণীটি আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কিছু দিন আগে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতরের সড়কে গাড়ি চাপায় একটি চিতা বিড়াল মারা গেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর