মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোটের হাওয়া সারাদেশে

ভোট কেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতীক পেয়েই ভোটের প্রচারে নেমেছেন। ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত আচরণবিধি মেনেই সব ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবেন তারা। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। প্রতি আসনে গড়ে ৬-৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকতে পারেন।

এদিকে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে তিন স্তরের নিরাপত্তা ছক সাজিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবারের নির্বাচনে সাধারণ এলাকার ভোট কেন্দ্রের পাহারায় একজন পুলিশসহ ১৪ জন সদস্য, মেট্রোপলিটন এলাকার ভোট কেন্দ্রে তিনজন পুলিশসহ ১৫ জন এবং দুর্গম ও উপকূলীয় এলাকার ভোট কেন্দ্রে দুইজন পুলিশসহ ১৪ জন সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। আর ভোট কেন্দ্রের বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন।

২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। বাছাই ও প্রত্যাহার শেষে এক হাজারেরও বেশি প্রার্থী ঝরে পড়েন। প্রায় ১ হাজার ৮৪১ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। ভোটের মাঠে কোথাও একক প্রার্থী নেই। প্রতি আসনে গড়ে ৬-৭ জন প্রার্থী থাকতে পারেন। সোমবার ৩০০ আসনে প্রতীক বরাদ্দের পর দলভিত্তিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতীক সংবলিত তথ্যও একীভূত করতে বিলম্ব হতে পারে। কয়েকটি জেলার তথ্য আসতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা। দশম নির্বাচনের তিনগুণের বেশি ও নবম সংসদ নির্বাচনের চেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হতে পারেন। ইতিমধ্যে প্রার্থীদের হলফনামা জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য (অসম্পূর্ণ) অনুযায়ী, ৩০৬৫টিরও বেশি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল; বাছাইয়ে বাতিল প্রায় সাড়ে ৫০০; প্রত্যাহার প্রায় ৪৫০ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ১ হাজার ৮৪১।

নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা : জানা গেছে, নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোটগ্রহণের আগে ও পরে ভিন্ন মেয়াদের জন্য সেনা, র‌্যাব ও পুলিশসহ অন্য বাহিনী মোতায়েন করতে যাচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা আগামী ২৪ ডিসেম্বর মাঠে নামতে পারেন। ভোটের পরে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন। বিজিবি, কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যরা স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিম হিসেবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। তবে এই পরিকল্পনা আইনশৃঙ্ঘলা বাহিনীর বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর ৩০০ সংসদীয় আসন এলাকায় সবমিলিয়ে ৬৪০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামবেন। তারা ভোটের পরও মাঠে থাকবেন। এ সময় নির্বাচনী অপরাধে সংক্ষিপ্ত বিচার করবেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক বৃহস্পতিবার : প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ভিডিপিসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনী ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ থাকবে। ভোটে সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত হওয়ায় এ বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারাও থাকবেন। ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং স্থানীয় পর্যায়ের পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও থাকবেন। ইসির যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান সংশ্লিষ্টদের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। এ বৈঠকের পরই মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন, কদিন-কীভাবে থাকবে তা নির্ধারণ করা হবে। এবার প্রথমবারের মতো গ্রামপুলিশ সদস্যদের ভোট কেন্দ্রে রাখা হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোট কেন্দ্র থাকবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছয় লাখের বেশি সদস্য মাঠে নামছেন। এ নির্বাচনে মোট ১০ কোটি ৪২ লাখের বেশি ভোটার। এবার ভোটের জন্য ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকায় তার সিংহ ভাগই যাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়। বিজিবি, কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যরা স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিম হিসেবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি মাঠে থাকবেন।

সর্বশেষ খবর