বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভোট নিয়ে অভিযোগ তদন্ত করুন

------- ড. ইফতেখারুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তা মূলত আংশিক অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। আচরণবিধি ব্যাপকভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। একই সঙ্গে সরকারের নৈতিক অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য এসব অভিযোগ সম্পর্কে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন তিনি। গতকাল রাজধানীর টিআইবির মাইডাস সেন্টারে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় এ দাবি করেন তিনি। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সব দলের প্রার্থী থাকলেও প্রচারণায় সবার জন্য সমান সুযোগ ছিল না। দলগুলোর সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দেখা যায়নি। প্রতিপক্ষকে দমনে সরকারি দলের সহায়ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণে বৈষম্যমূলক আচরণ করতে দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের সময় তথ্য প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে যেটা বিতর্কিত হয়েছে। গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের জন্য অভূতপূর্ব কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রশাসন ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করতে দেখা গেছে। যেটা আইনের লঙ্ঘন।’ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের কারণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সর্বোপরি আংশিকভাবে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। আচরণবিধির ব্যাপক লঙ্ঘন হয়েছে। লঙ্ঘনের অভিযোগের কারণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ এবং একটি অভূতপূর্ব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার ফলাফল অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অবশ্যই ব্যাপকভাবে লজ্জাজনক ছিল।’ এসব অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সরকারের নৈতিক দৃঢ়তার জন্য ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তার বিচারবিভাগীয় তদন্তের ?উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। যেটা তাদের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অবস্থান সুদৃঢ় করবে।’ টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, যেভাবে এবারের নির্বাচনটা পরিচালিত হয়েছে তাতে প্রচুর ত্রুটি ছিল। তাই আমরা আশা করব নির্বাচন কমিশন এ ত্রুটিগুলো দেখে, এর সত্যাসত্য বিচার করে পরবর্তী যে নির্বাচনগুলো হবে সেগুলোয় যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয় সে চেষ্টা করবে। কারণ আমরা দেখতে চাই, সত্যিকার অর্থেই জনগণের পছন্দের মানুষরাই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য উদাহরণ রেখে যায় যে, যদি নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ না থাকে তাহলে নির্বাচনটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়, বিতর্কিত হয়ে যায়। আর তখন একটা সংশয় থেকেই যায় যে, যারা আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে গেলেন, তারা আমাদের কতটুকু প্রতিনিধিত্ব করবেন, জনগণের স্বার্থ কতখানি দেখবেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।

সর্বশেষ খবর