নারী শক্তিতে অর্জন এবং প্রতিপালনের বন্দনায় কুমারী পূজার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী পালিত হয়েছে মহাঅষ্টমী। গতকাল রাজধানীর গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। এ ছাড়া মহাঅষ্টমী এবং সন্ধি পূজার আয়োজনে দিনভর ভক্তদের উপস্থিতিতে সরগরম ছিল মন্দির প্রাঙ্গণ। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপীবাগ রামকৃষ্ণ মিশনে শুরু হয় কুমারী পূজার আয়োজন। লোহিত বস্ত্রে বিল্বপত্র, পুষ্পাসনে সজ্জিত পূজার বেদিতে বসেন ‘কুমারী দেবী’। তার হাতে ছিল ফুল, কপালে সিঁদুর এবং পায়ে আলতা। মন্ত্রোচ্চারণে, স্তুতিতে দেবীর বন্দনা করেন পুরোহিতরা। সাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বহু বছর আগে নিজের স্ত্রী সারদা দেবীকে মাতৃজ্ঞানে পূজা করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় উপমহাদেশের মিশন ও মঠগুলোতে চলছে কুমারী পূজা। ভক্তদের বিশ্বাস, এটি একাধারে ঈশ্বরের উপাসনা, মানব বন্দনা এবং নারীর মর্যাদার প্রতিষ্ঠা। রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ বলেন, হিন্দু শাস্ত্রের ধর্মীয় গ্রন্থে কুমারী পূজার পদ্ধতি ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্দির ঢাকেশ্বরীতে অষ্টমী পূজার অঞ্জলিতে ভিড় জমান উপবাসরত ভক্তরা। গতকাল সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে অষ্টমী তিথি শুরু হয়। বেলা ১১টায় পূজা শেষে কয়েক দফায় চলে অঞ্জলি প্রদান। বেলা ২টা ২৭ মিনিটে সন্ধি পূজা শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ৩টা ১৪ মিনিটে। রমনা কালীমন্দির ও শ্রীমা আনন্দময়ী আশ্রমে ঢাকের বাদ্য বাঁশির সুরে চলে অষ্টমী পূজার আয়োজন। সন্ধ্যায় আরতি প্রতিযোগিতার সঙ্গে বিভিন্ন মন্দিরে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাজধানীর বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজাম পে ছিল জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। সন্ধ্যা আরতিতে অষ্টমী পূজার ইতি টানতেই সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুখর হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। আজ নবমী। সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে দেবী দুর্গার মহানবমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা শুরু হবে। আজকেও পূজা শেষে অঞ্জলি দেবেন উপবাসরত ভক্তরা। আগামীকাল দশমী পূজায় দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
