প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’ (বিবিএফএ)। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রী হলে গতকাল সন্ধ্যায় শেষ হয় দুই বাংলার আয়োজনে জমকালো এই ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ প্রথম যৌথভাবে সম্মানিত করল দুই দেশের বিনোদন জগতের তারকাদের।
বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু। এরপর দেখানো হয় ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে নির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ওপর তথ্যচিত্র। এরপর ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি ফেরদৌসুল হাসান দিলেন উদ্বোধনী ভাষণ। এরপর মঞ্চে আসেন টিএম ফিল্মের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নী। তার ভাষণ শেষে উপস্থাপক মঞ্চে এক এক করে ডেকে নেন দুই বাংলার জুরি বোর্ডের মোট দশজন সদস্যকে। বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন আলমগীর, সারাহ বেগম কবরী, ইমদাদুল হক মিলন, খোরশেদ আলম খসরু ও হাসিবুর রেজা কল্লোল। অন্যদিকে, ভারত থেকে ছিলেন গৌতম ঘোষ, ব্রাত্য বসু, গৌতম ভট্টাচার্য, অঞ্জন বোস ও তনুশ্রী চক্রবর্তী। তাদের উত্তরীয় পরিয়ে ও হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে সম্মানিত করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। তিনি তার শুভেচ্ছা ভাষণে দুই বাংলার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান, গানবাংলার চেয়ারপারসন ও ওপার বাংলা থেকে আসা গুণীজনরা একে একে বক্তব্য দেওয়ার পর শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। উপস্থাপনায় ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঞ্চালক শাহরিয়ার নাজিম জয়, শান্তা জাহান এবং ওপার বাংলার জনপ্রিয় উপস্থাপক মীর আফসার আলী ও গার্গি রায়চৌধুরী। এরপর মঞ্চে ফারজানা মুন্নীর সঙ্গে দুই বাংলার জনপ্রিয় দুই সুপারস্টার শাকিব খান ও জিৎ পতাকা ও কোরিওগ্রাফি নিয়ে হাজির হন। সঙ্গে ছিলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় তারকারা। এর পরই দেওয়া হলো লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। ভারতের রঞ্জিত মল্লিক ও বাংলাদেশের আনোয়ারা বেগমকে দেওয়া হয় এ অ্যাওয়ার্ড। এর সঙ্গে দুই বাংলার তারকাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নানা বিষয়ে সম্মাননা। এর মধ্যে ছিল সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রী, সেরা ছবি, সেরা মিউজিকসহ সিনেমার ২৪টি বিভাগ। পপুলার, টেকনিক্যাল ও রিজিওনাল- এ তিন ক্যাটাগরিতে শিল্পী-কুশলীদেরও পুরস্কৃত করা হয়। এ ক্ষেত্রে বিচার্য ২০১৮ সালের জুন থেকে চলতি বছরের (২০১৯) জুন পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রগুলো। এরপর একই মঞ্চে বালামের সুর ও সংগীতায়োজনে আটজন শিল্পী হাজির হন। তাদের পারফরম্যান্সের পরই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ধামাকা দ্বৈত পারফরম্যান্স নিয়ে মঞ্চে আসেন দুই বাংলার গায়ক ও অভিনয়শিল্পীরা। সলো পারফরম্যান্স করেন নুসরাত ফারিয়া, পরীমণি ও বিদ্যা সিনহা মিম। ইমন-মেঘলা মুক্তা এবং তমা মির্জা-নিরবের অংশগ্রহণে ছিল গানের সঙ্গে নৃত্যের চমক। বাংলাদেশের তারকা শিল্পীদের পারফর্ম ছাড়াও ওপার বাংলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে ছিল গান ও নৃত্য। একক গান নিয়ে হাজির হন ওপার বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী ঊষা উথুপ, রূপম ইসলাম, ইমন চক্রবর্তী ও নিকিতা গান্ধী। ফিউশান গান নিয়ে মঞ্চে একসঙ্গে হাজির হন দেবজ্যোতি মিশ্র ও ইন্দ্রনীল দাশগুপ্ত। গানের পরে ধামাকা ড্যান্স নিয়ে মঞ্চে আসেন জনপ্রিয় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও ঋতাভরী চক্রবর্তী।
দুই দেশের দুই শতাধিক তারকার মিলনমেলায় মুখর হয়ে উঠেছিল অনুষ্ঠানস্থল। দুই বাংলার সম্মানিত ও বিশাল ব্যাপ্তির অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এপার বাংলা ও ওপার বাংলার জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ, চিত্রনায়ক আলমগীর, সারাহ বেগম কবরী, ইমদাদুল হক মিলন, খোরশেদ আলম খসরু, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, হাসিবুর রেজা কল্লোল, শাকিব খান, জয়া আহসান, পরীমণি, বিদ্যা সিনহা মিম, পূজা চেরি, ইয়ামিন হক ববি, আঁখি আলমগীর, হৃদয় খান, শওকত আলী ইমন, বালাম, শাহরিয়ার রাফাত, মিনার রহমান, ইমরান, রায়হান রাফি, পারভেজ, পুলক, সিঁথি সাহা, কোনাল, ঐশী, রেশমী মির্জা, মেঘলা মুক্তা, তাসকিন রহমান, তানহা তাসনিয়া প্রমুখ। ছিলেন ওপার বাংলার স্বনামখ্যাত নায়ক রঞ্জিত কুমার মল্লিক, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, জিৎ (জিতেন্দ্র মাদনানি), রুদ্রনীল ঘোষ, পরমব্রত চ্যাটার্জি, আবির চ্যাটার্জি, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পাওলি দাম, নির্মাতা গৌতম ঘোষ, অরিন্দম শীল, সৃজিত মুখার্জি, কৌশিক গাঙ্গুলী, রজতাভ দত্ত, গৌতম ভট্টাচার্য, অঞ্জন বোস, তনুশ্রী চক্রবর্তী, ব্রাত্য বসু, দেবজ্যোতি মিশ্র, ইন্দ্রনীল দাশগুপ্ত, রুপম ইসলাম, লগ্নজিতা চক্রবর্তী, নিকিতা গান্ধীসহ জনপ্রিয় অভিনেতা-নির্মাতারা।