খুনের পর লুটের অর্থ দিয়েই অস্ত্র ও গাড়ি কেনার কথা ছিল ওদের। স্বপ্ন ছিল একদিন বড় সন্ত্রাসী হওয়া। যেই কথা সেই কাজ। কয়েক দফা মিটিং করে তিন বন্ধু টার্গেট করে তাদেরই একজনের বিত্তশালী চাচা সিদ্দিক বেপারীকে (৫০)। পরিকল্পনা অনুযায়ী চাচা-চাচি ও চাচাতো ভাইকে খুন করার পর ধর্ষণ করা হবে চাচাতো ভাইয়ের সুন্দরী স্ত্রীকে। চাচিকে খুন করলেও মৃতপ্রায় চাচার চিৎকারে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে যাওয়ায় ভ ুল হয়ে যায় তাদের পরিকল্পনা। রক্ষা পায় চাচাতো ভাই ও তার স্ত্রী। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে খুনের সঙ্গে জড়িত হোসেন ওরফে আপন (১৯), ইমন রায়হান (১৮) ও রায়সুল ইসলাম রিফাত (১৯) নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
জানা গেছে, খুনের আগে কয়েক দফায় রেকি করা হয় গাজীপুর সদরের বিলাসপুর এলাকার সিদ্দিক বেপারীর বাড়ি। খুনিরা জানতে পারে প্রতিদিনই ফজরের নামাজ পড়তে পার্শ্ববর্তী মসজিদে যান সিদ্দিক বেপারী (৫০)। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩ নভেম্বর ওই বাড়ির পাশে অবস্থান নেয় সিদ্দিক বেপারীর ভাতিজা হোসেনের নেতৃত্বে তার দুই বন্ধু ইমন ও রিফাত। সিদ্দিক নামাজ পড়তে বের হওয়া মাত্র ঘরে ঢুকে তার স্ত্রী রিনা আক্তারকে (৪৫) গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। নামাজ শেষে বাসায় ফেরা মাত্র সিদ্দিককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং গলায় ছুরিকাঘাত করে মৃত ভেবে পাশের কক্ষে নিহতের ছেলে দেলোয়ারকে খুন করতে যায়। হঠাৎ করেই সিদ্দিকের চিৎকারে আশপাশের মানুষজন চলে আসায় খুনিরা রক্তাক্ত কাপড় পরিহিত অবস্থাতেই তাদের মতো করে পালিয়ে যায়। তবে পালিয়ে যাওয়ার আগেই নগদ তিন লাখ এবং ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয় তারা। গুরুতর আহত সিদ্দিক বেপারী বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। র্যাব-১ এর ক্যাম্প কমান্ডার লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আল-মামুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গ্রেফতারের পরপরই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনিরা তাদের অপরাধকান্ডে র কথা স্বীকার করেছে। আগে বড় ধরনের কোনো অপরাধ না করলেও এ খুনের পর লুটের টাকা দিয়েই বড় সন্ত্রাসী হওয়াই ছিল ওদের স্বপ্ন।