দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীর এক নারীকে এই প্রথমবারের মতো ইসলামী রীতি অনুযায়ী জানাজা পড়িয়ে দাফন করা হয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে এই দাফন-পর্ব হয়। উল্লেখ্য, এর আগে কোনো যৌনকর্মী মারা গেলে তার দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো অথবা রাতে জানাজা ছাড়াই ডোমদের দিয়ে লাশ মাটিচাপা দেওয়া হতো। জানা গেছে, হালিমা বেগম (৬৫) নামের ওই যৌনকর্মীর জানাজায় দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেন। দাফনের পর চার শতাধিক নারী দোয়ার জন্য তার কবরের পাশে জড়ো হন। সেখানে ছিলেন হালিমার মেয়ে লক্ষ্মীও। মায়ের পথ ধরে তাকেও এই পেশায় যেতে হয়েছে। লক্ষ্মী বলেন, ‘এভাবে মায়ের দাফন হবে কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। শেষ যাত্রায় মানুষের মতো আচরণ করা হয়েছে আমার মায়ের সঙ্গে।’
এ বিষয়ে আরও জানা গেছে, হালিমার জানাজার জন্য ইমামকে রাজি করানোর অনুরোধ নিয়ে ওই পল্লীর ছয়জন গিয়েছিলেন পুলিশের কাছে। তখন গোয়ালন্দঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান স্থানীয় একজন ইমামকে জানাজা পড়ানোর জন্য বলেন। কিন্তু জানাজা পড়ানোর জন্য ইমাম রাজি হচ্ছিলেন না। আশিকুর রহমান বলেন, ‘ইমাম প্রথমে জানাজার নামাজ পড়াতে রাজি ছিলেন না। তখন আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ইসলাম ধর্মে একজন যৌনকর্মীর জানাজায় নিষেধাজ্ঞা আছে কি না- তিনি এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এরপর অনেকটা বাধ্য হয়েই তিনি জানাজা পড়াতে রাজি হন। জানাজা-পরবর্তী দোয়ার আয়োজন ও তবারক গ্রহণ করতে চার শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ওই যৌনকর্মীর দাফন-কাফন করতে দৌলতদিয়ার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক সহায়তা করে। এরপর থেকে স্থানটিতে ইসলামী শরিয়া অনুসারে জানাজা ও দাফন অব্যাহত থাকবে বলে সবাই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’