মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভায় খসড়া অনুমোদন

হজের তিন প্যাকেজ ব্যয় বেড়েছে দুটিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের সুযোগ রেখে চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ‘হজ প্যাকেজ, ১৪৪১ হিজরি/২০২০ খ্রিস্টাব্দ’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে চলতি বছরের হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এবার হজ পালনে সরকারিভাবে তিনটি প্যাকেজ করেছে সরকার। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ হচ্ছে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২ হচ্ছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ-৩ এ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তৃতীয় প্যাকেজটি এবারই প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত বছর প্যাকেজ-১ এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হয় ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। এবারের হজ প্যাকেজ-১ এ গত বছরের তুলনায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা বেশি ব্যয় হবে। একইভাবে প্যাকেজ-২ এ গত বছর ব্যয় হয়েছিল ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এবার সেখানে ১৬ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হবে।

আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্যাকেজ-১ এর মাধ্যমে যারা যাবেন তাদের থাকার ব্যবস্থা হবে মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ মিটারের মধ্যে। প্যাকেজ-২ এর মাধ্যমে যারা যাবেন তাদেরকে রাখা হবে মসজিদুল হারাম থেকে দেড় হাজার মিটারের মধ্যে। আর এবারই প্রথমবারের মতো তৃতীয় প্যাকেজ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের আওতায় যারা যাবেন দেড় কিলোমিটারের দূরত্বে থাকার সুযোগ পাবেন। তিনি জানান, হজযাত্রীদের থাকা, খাওয়া, বিমান ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক সব খরচ ধরেই এবারের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় করা হজ প্যাকেজ তিনটির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে। এর বাইরে কিছু করা যাবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ বছর মোট এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী হজ করার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন হজে যেতে পারবেন। তিনি জানান, বিমানের টিকিট বাবদ নেওয়া অর্থ হজ এজেন্সি ব্যাংক থেকে ওঠাতে পারবে না। হজযাত্রীর সংখ্যা অনুযায়ী সরাসরি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এয়ারলাইনসকে পরিশোধ করতে হবে এবং সৌদি আরবের বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন বাবদ নেওয়া অর্থ আইবিএএন (ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর) এর মাধ্যমে  সৌদি আরবে পাঠানো ছাড়া এজেন্সি তা উত্তোলন করতে পারবে না। এবার শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিমান ভাড়া এক লাখ ৩৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গতবার একটা বিশেষ ছাড়ে ১০ হাজার টাকা কমানো হয়েছিল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রত্যেক হজ এজেন্সি কমপক্ষে ১০০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী পাঠাতে পারবে। প্রতি ৪৪ জন হজযাত্রীর জন্য একজন করে গাইড রাখতে হবে। এ ছাড়া কোরবানির অর্থ ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে সৌদি সরকার পরামর্শ দিয়েছে। এজন্য প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৫২৫ সৌদি রিয়ালের সমপরিমাণ অর্থাৎ ১২ হাজার ৭৫ টাকা সঙ্গে নিতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, বিমান বাংলাদেশ এবং সৌদিয়ার পাশাপাশি নাস এয়ারলাইনসের মাধ্যমে এবার হজযাত্রী পরিবহন করা নিয়ে আলোচনা চলছে। হজ প্যাকেজ ছাড়াও গতকালের বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ ছাড়া জাতীয় ডিজিটাল কমার্স (সংশোধিত) নীতিমালা- ২০২০ এর খসড়াও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সর্বশেষ খবর