রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
স্বাস্থ্য পরামর্শ

করোনাকালে গর্ভবতীদের ডায়াবেটিস

অধ্যাপক ডা. আবদুল মান্নান সরকার

কারোনা মাহামারীতে অন্যদের মতো গর্ভবতী নারীদেরও সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, এমন সময় গর্ভবতী নারীরাও এই ঝুঁকির বাইরে নন। গর্ভকালীন সময়ে এমনিতেই নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এমন সময় শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের হারও বেশি। তা ছাড়া গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস একজন নারী নানা রকম প্রতিকূলতা বা সমস্যায় দিন কাটান। যেমন- শারীরিক দুর্বলতা, একাকিত্ব, অবসাদ, জ্বর জ্বর ভাব, বমি ভাব, অরুচি প্রভৃতি। যার সঙ্গে করোনা উপসর্গের অনেকটা মিল রয়েছে। তাই করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রত্যেকের ধারণা থাকা প্রয়োজন। করোনা সংক্রমণের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে সেটিকে গুরুত্বসহকারে দেখুন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করুন। করোনাকালে যারা গর্ভবতী, সঙ্গে যাদের রয়েছে ডায়াবেটিসের মতো রোগ, তাদের করোনা মহামারীতে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে। এমন সময় পুরোপরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। মাছ, মাংস ও ডিম ইত্যাদি পুরোপুরি সেদ্ধ করে রান্না করে খেতে হবে। এমনকি গর্ভবতী নারীর আশপাশে যারা থাকবেন, তাদেরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিনের খাবারের তালিকা এবং ইনসুলিন ডোজও চিকিৎসকের পরামর্শে নিতে হবে। আর ডায়াবেটিস আক্রান্ত কোনো গর্ভবতী নারী করোনা সংক্রমিত হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এমন রোগীদের সুগার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। তবে গর্ভবতী মা করোনা আক্রান্ত হলে যে তার পেটের সন্তানেরও করোনা হবে; এ ধারণা ভুল। কারণ, করোনা আক্রান্ত মায়ের পেটের সন্তানকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ করে না। শিশু জন্ম নেওয়ার পর মায়েরা তাদের সন্তানকে বুকের দুধও দিতে পারবেন। বুকের দুধ শিশুকে ভাইরাস সংক্রমিত করে না, শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাওয়াতে হবে। বাড়ি থেকে একদমই বের হওয়া যাবে না। বাইরের কোনো মানুষের সংস্পর্শে আসা যাবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে সবার থেকেই। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। নাকে-মুখে-চোখে হাত দেওয়া যাবে না। করোনাকালে গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক সুস্থতার বিকল্প নেই। আর ডায়াবেটিস আক্রান্ত মায়েদের শারীরিক সুস্থতাই প্রধান হাতিয়ার। ঘরে থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করুন। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। সঠিক সময়ে ঘুমের অভ্যাস করুন। বাড়িতেই নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন। বাড়ির টুকটাক কাজ করুন। মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকুন।

লেখক: সিনিয়র কনসালটেন্ট, ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর