বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

উদ্বোধনের ছয় বছরেও আলোর মুখ দেখেনি প্রতিবন্ধী বিষয়ক অধিদফতর

আজ আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ৩ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা, প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতার প্রসার ও উন্নতি সাধন নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রতি বছর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। তবে দেশের প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার অর্জনে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকেও সম্পৃক্ত করি, নতুন করে টেকসই বিশ্ব গড়ি’।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার পর ছয় বছর পার হলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদফতর। প্রতিবন্ধী ও তাদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলো তখন থেকেই এ অধিদফতর বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে ৮ হাজার বেকার যুবকের চাকরিসহ অন্যান্য সুযোগ সৃষ্টি হবে।

জানা যায়, ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এ ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদফতরে  রূপান্তরের ঘোষণাসহ নামফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু আজও আলোর মুখ দেখেনি প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদফতর। জানতে চাইলে চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের আহ্বায়ক মো. আলী হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনার সময় পেশাজীবীদেরই জীবন নির্বাহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় প্রতিবন্ধীরা মানবেতর-জীবন যাপন করছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী অবিলম্বে প্রতিবন্ধী অধিদফতরের আনুষ্ঠানিক                কার্যক্রম চালুর দাবি জানান তিনি। জানা যায়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের একক কোনো আলাদা দফতর বা পরিদফতর নেই। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা পরিষেবা অধিদফতরে কিছু সুযোগ থাকলেও তা কর্মক্ষেত্র উপযোগী অনেকাংশ নয়। সমাজসেবা অধিদফতর বর্তমানে ৫১টি বিষয় নিয়ে কাজ করে। ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আলাদা সময় দেওয়া বা তাদের উন্নয়নে কোনো সমাজসেবা র পক্ষে সম্ভব নয়। অভিযোগ রয়েছে, গ্র্যাজুয়েট পরিষদের প্রতিনিধি দল সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাইলে করোনার কারণে প্রবেশেরে সুযোগ দেওয়া হয়নি। অথচ অপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশেরে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবন্ধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলছেন, বর্তমানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থা এমন তাদের দুই বেলা খেয়ে জীবন পার করা কঠিন। মুজিববর্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে সুবিধাভোগীদের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও শিক্ষিত বেকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। মো. আলী হোসেন বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদফতর প্রতিষ্ঠিত হলে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীদের অভিযোগ প্রদান, প্রতিকারসহ জাতীয় সমন্বয়ের ক্ষেত্রে এ অধিদফতর ভূমিকা রাখবে। সংবিধানে দেশের সব নাগরিকের সমঅধিকার দিলেও সর্বস্তরে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার এখনো নিশ্চিত হয়নি। প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়ন ও অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদফতর প্রতিষ্ঠায় সরকার গুরুত্ব দেবে এটাই প্রত্যাশা।

সর্বশেষ খবর