প্রেসিডেন্ট থাকাকালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের  গোপন কিছু কর্মকান্ড ফাঁস করে দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় টাস্কফোর্সের সদস্য ডা. ডেব্রাহ বার্কস। স্থানীয় সময় গত রবিবার সিবিএস নিউজের ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে মার্গারেট ব্রেনানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বার্কস বলেছেন, ট্রাম্প ও হোয়াইট হাউসের অনেক কর্মকর্তা কভিড-১৯  রোগ স্রেফ ধাপ্পাবাজি বলেই বিশ্বাস করতেন। তারা এ ব্যাপারে ছিলেন উদাসীন। তারা বলতেন, এসব প্রতারণা। ডা. বার্কস বলেছেন, ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে কিছু লোক ছিলেন যারা বিশ্বাস করেছিলেন যে, কভিড-১৯ একটি তামাশা। এমনকি বাস্তবতার আলোকে তিনি যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তা প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় পাননি। তার পরিবর্তে ট্রাম্পের ইচ্ছার পরিপূরক চার্ট প্রদর্শন করা হয়েছে। আর এভাবেই করোনার থাবা প্রচ- গতিতে বিস্তৃত হয়েছে গোটা আমেরিকায়।

এই অনুষ্ঠানে করোনা মহামারী মোকাবিলায় কাজ করার সময় যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন তা সবিস্তারে উল্লেখ করেছেন ডা. বার্কস। সাংবাদিক মার্গারেট ব্রেনান জানতে চান, ‘হোয়াইট হাউসে এমন কেউ ছিলেন কিনা যারা করোনা মহামারীকে আমলে নিতে চাননি কিংবা এটি যে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক তা অনুধাবন করেননি?’ জবাবে বার্কস বলেছেন, ‘কিছু লোক ছিলেন, যারা নিশ্চয়ই মনে করেছেন যে, সত্যিকার অর্থেই এটি একটি প্রতারণা।’ কেন সত্য গোপন করে মিথ্যা প্রচারে চাপ দেওয়া হয়- জবাবে ডা. বার্কস বলেছেন, আমি মনে করি শুরুতে তথ্যগুলো বিভ্রান্তিকর ছিল। সঠিক তথ্য আমরা পরিবেশনে সক্ষম হইনি। এ অবস্থায় ট্রাম্পের লোকজন বলেছেন যে, করোনা আক্রান্ত হলেও সবাই সুস্থ হয়ে উঠছেন। তারপর তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিল এই রোগটি কতটা গুরুতর এবং কীভাবে এটি আমেরিকানদের মৃত্যুর মিছিলে রূপ নেবে। বার্কস দাবি করেন, গত বছরের মার্চে মহামারীর ভয়াবহতা অনুধাবন করেছিলেন। সে সময় তিনি অবশ্য ট্রাম্পকে অবহিত করেন যে, প্রেসিডেন্টের কাছে এমন কিছু তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে যা তার (বার্কস) কাছ থেকে আসেনি, অর্থাৎ ভুয়া তথ্য। বার্কস বলেন, ‘হোয়াইট হাউসে পৌঁছানোর পর আমি যেসব তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ করেছিলাম, সেগুলো সরিয়ে ফেলা হলো। তার স্থলে হোয়াইট হাউসের উদ্ভট তথ্যগুলো থামিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। আমি দেখলাম, আমার সামনেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করোনার গতিবিধি আলোকে যে তথ্য-চিত্র উপস্থাপন করেছেন আমার রেফারেন্সে, প্রকৃত অর্থে সেটি আমার ছিল না। আমার প্রস্তুতকৃত তথ্য-চিত্রে হোয়াইট হাউসের কিছু লোক ওসব অসত্য-অবাস্তব তথ্য-জুড়ে তা ব্রিফিংকালে প্রদর্শন করেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট। বার্কস বলেন, করোনার প্রকৃত তথ্য প্রকাশে তাকে বারিত করা হয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে। অথচ তিনি আশা করেছিলেন জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে আরও বেশি তথ্য উপস্থাপন করতে পারবেন। বিশেষ করে করোনা টেস্টিং ইস্যুতে। আমি জানতাম না যে, বরখাস্তের খামটি কতটুকু দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হব। বার্কস উল্লেখ করেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের কথাবার্তা করোনা দমনের কার্যক্রমকে বিভ্রান্ত করেছে, যার পরিণতিতে এতগুলো আমেরিকানের প্রাণ গেছে।