মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক ও রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন শুরু

ঢাকা ও পার্শ¦বর্তী এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান শুরু করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে অভিনব উপায়ে অবৈধ গ্যাস বেলুন ব্যবহারকারীদের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার এ অভিযান শুরু হয়। রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া থেকে শুরু হয় এ অভিযান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ। গতকাল বেলা ১টায় শুরু হওয়া এ অভিযানে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের মাঝিনা ও চনপাড়া এলাকায় ৪০টি গ্রামের ২০০ বৈধ গ্যাস পাইপ লাইনের সংযোগসহ চার হাজারের বেশি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের একটি প্রতিনিধি দল এ অভিযান চালায়। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার শিল্প-কারখানা এবং আবাসিক এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে তিতাস কর্তৃপক্ষের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, রূপগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জের অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে তিতাসের গ্যাসলাইন অবৈধভাবে ব্যবহার করে আসছিল। আর এতে যে শুধু সরকারের রাজস্ব আয়ের ক্ষতি হচ্ছিল তা নয়, একই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হচ্ছিল সমস্যা। আবার যারা বৈধভাবে গ্যাসের লাইন নিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গেও এসব প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক দূরত্ব বেড়ে যায়। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসব এলাকার সব বৈধ-অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার। তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ এলাকায় যখন পাইপলাইন দেওয়া হয়, তখন মাত্র ২০০ বৈধ গ্রাহক ছিলেন। কিন্তু সেখানে সাড়ে চার হাজারের মতো গ্রাহক অবৈধ সংযোগও নিয়েছেন। সেখানে গ্রাম থেকে গ্রামে অবৈধ গ্যাস বেলুন ব্যবহার করা হচ্ছে। আর যে লাইনটি ওই গ্রামে টানা হয়েছে তা তিন ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট। ২০১২ সালে এটি টানা হয়। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই গ্রামে দুর্ঘটনা রোধে বৈধ-অবৈধ সব গ্যাসলাইন বিচ্ছিন্ন করব। মানুষ মেরে ফেলার চেয়ে এখানে গ্যাস সংযোগ না দেওয়াই ভালো। এ ছাড়া গ্যাস আইনেও বলা আছে, জননিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গ্যাস সংযোগ নাও দিতে পারেন। বর্তমানে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের মাঝিনা ও চনপাড়া এলাকার সব গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। চার হাজারের বেশি অবৈধ সংযোগ ছাড়াও এসব গ্রামে কত সংখ্যক অবৈধ বেলুন আছে, এর কোনো হিসাব নেই। আমরা অনুমোদন নিয়ে হয়তো এখানে গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেব।’ এসব গ্রাহককে বিকল্প হিসেবে এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি। এ অভিযান চলাকালে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খান, ভিজিল্যান্সের জি এম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের ডিএমডি প্রকৌশলী মমিনুল হক, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির, সোনারগাঁও কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক ডা. প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল, ব্যবস্থাপক মিসবাহ-উর রহমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, যেসব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়, সেখানে অবৈধভাবে প্লাস্টিকের বড় বড় বেলুনে গ্যাস সংরক্ষণ করা হতো। সেখান থেকে প্রয়োজনমতো গ্যাস ব্যবহার করা হতো, যা জনজীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছে।

সর্বশেষ খবর