মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষিত বনে আগুনে লেগেছে। প্রায় দুই ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লাউয়াছড়ার স্টুডেন্ট ডরমেটরি অংশে কাজ করছিল কিছু শ্রমিক। কিন্তু দুপুর ১২টার দিকে সেখানে হঠাৎ আগুন জ্বলে ওঠে। আগুনে বনের প্রায় ২ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছে।  স্থানীয়দের ধারণা, বনের মধ্য লাকড়ি কুড়াতে আসা কেউ বনে জ্বলন্ত সিগারেট ফেলে দিয়েছে। আর এর থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। বন বিভাগ বলছে, তারা বনের এই জমির ঝোপজঙ্গল পরিষ্কারের জন্য শ্রমিক লাগিয়েছিল। তবে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে বন বিভাগ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ওয়াহিদ জানান, আগুনে প্রায় বনের দুই থেকে আড়াই একর জায়গার ঝোপজঙ্গল পুড়ে গেছে। এখানে বড় কোনো গাছ ছিল না। দমকল কর্মীরা দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ বিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, কয়েক বছর পর পরই লাউয়াছড়া বনে আগুন লাগার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এই আগুন লাগার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে বনের সাপ, ব্যাঙ, কচ্ছপ, কেঁচো, গুইসাপ, বনের নিচু স্তরের পাখি ও নিচু স্তরে বসবাসকারী অনান্য জীবজন্তু। এ ছাড়াও বনে জন্মানো ফার্ন, মস, শৈবাল, গুল্ম ও লতাজাতীয় উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আগুনের তাপে মাটিতে থাকা অনেক গাছের বীজ মারা যাবে। যা চলতি বর্যা মৌসুমে অঙ্কুরিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ফলদ ও বনজ বৃক্ষের চারা রোপণের জন্য শ্রমিকরা বনের এই স্থানে জঙ্গল পরিষ্কার করছিল। আগুনে প্রায় এক একর ঝোপজঙ্গল পুড়ে গেছে।  বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ (সিলেট) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, দুটি কারণে আগুন লাগতে পারে। একটি হচ্ছে কেউ ইচ্ছা করে লাগিয়ে দিল, অন্যটা হতে পারে কারও অসাবধানতাবশত। তবে সঠিক কী কারণে আগুন লেগেছে তার জন্য দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। কমিটিকে  তিন কার্যদিবসের মধ্য তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।