বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

লাশের বস্তা খুলে দেয় খুনের রহস্য

মির্জা মেহেদী তমাল

লাশের বস্তা খুলে দেয় খুনের রহস্য

শ্রীমঙ্গলে উদনাছড়া ব্রিজের নিচ থেকে বস্তাবন্দী অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পরিচয় জানতে পুলিশ নানাভাবে চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ এবার বস্তার দিকে নজর দেয়। বস্তাতেও নেই কোনো ক্লু। হঠাৎ পুলিশের এক কর্মকর্তার চোখ আটকে যায় বস্তায় লেখা একটি নামের দিকে। তাতে লেখা অনিক, শ্রীমঙ্গল।

পুলিশ বস্তায় লেখা অনিক নামের সূত্র ধরে এগোতে থাকে। শহরের একটি মার্কেটে গিয়ে কাপড় ব্যবসায়ী অনিকের সন্ধান মেলে। অনিক ও তার ভাই পুলিশকে জানান, এই বস্তাটি তাদের দোকানের। মসুদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি রাতে বস্তাটি তাদের কাছ থেকে কিনে নেন। এ তথ্য পেয়ে পুলিশ খুঁজতে বের হয় মসুদ মিয়াকে। রাত ৩টায় রামনগর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়  মো. মসুদ মিয়াকে। মসুদের বাবার নাম এখলাছ মিয়া। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে  বের হয় হত্যার রহস্য। পুলিশ জানায়, মাসুদ মিয়া স্বীকার করে অজ্ঞাতনামা ওই নারী তার স্ত্রী ডলি আক্তার। তার বাড়ি ঝিনাইদহে। ৭/৮ মাস আগে শ্রীমঙ্গলে মসুদ মিয়ার সঙ্গে পরিচয় সূত্রে তাদের বিয়ে হয়। ডলি ছিল মসুদের চতুর্থ স্ত্রী। বিয়ের পর তারা শহরের সিন্দরখান সড়কে মসুদের বাসায় থাকতেন। মসুদের আরও মেয়েদের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো।

গত ২১ মে তাদের মধ্যে ঝগড়া হলে মসুদ কাপড় ও রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে ডলিকে হত্যা করে। ওইদিন লাশ ঘরের মধ্যই ছিল। পরের দিন মসুদ প্লাস্টিকের বস্তা কিনে এনে লাশ ওই বস্তায় ভরে। রাতে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে লাশের বস্তাটি উদনাছড়া ব্রিজ থেকে নিচে  ফেলে দেয়। পথে সিএনজি অটোরিকশাচালক বস্তার ভিতরে কী আছে জানতে চাইলে মসুদ বলে মৃত গরুর বাচ্চা রয়েছে। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আশরাফুজ্জামান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে লাশের গলায় চিহ্ন দেখেই বুঝতে  পেরেছিলাম এটা পরিকল্পিত হত্যা। পরে লাশের সঙ্গে বস্তায় অনিক লেখা নামের সূত্র ধরে ঘটনা উদঘাটন করে খুনিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

সর্বশেষ খবর