শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
টার্গেট করোনার টিকাপ্রার্থী

খুদে বার্তা পাঠিয়ে অর্থ আদায়, গ্রেফতার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

কম সময়ের মধ্যে দ্রুত করোনার টিকা দেওয়ার নাম করে বিদেশগামীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিত একটি চক্র। এ কাজে তারা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে অপেক্ষা করত। এরপর বিদেশগামী টিকাপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিত। বুধবার রাজধানীর মুগদা এলাকা থেকে এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩। এরা হলেন- মো. নুরুল হক, মো. সাইফুল ইসলাম, দুলাল মিয়া ও মো. ইমরান হোসেন। গতকাল কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে ভ্যাকসিনের এসএমএস নিয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন। খুদে বার্তা ছড়িয়ে তারা এ অর্থ আত্মসাৎ করতেন। টিকাপ্রতি আড়াই থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। সাইফুল ও ইমরান হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে ভিকটিমদের এসএমএম দ্রুত পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। এরপর প্রার্থীদের নিয়ে যাওয়া হতো চক্রটির সর্দার নুরুল হকের কাছে। নুরুল হক টাকা নিয়ে দর কষাকষি করতেন। টাকার পরিমাণ নিয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে বোঝাপড়া হয়ে গেলে, তাদের নিয়ে যাওয়া হতো দুলালের কাছে। দুলাল ভুক্তভোগীদের এসএমএস পাওয়ার সম্ভাব্য সময় জানিয়ে দিতেন। বিশেষত বিদেশগামী যাত্রীরাই ছিল মূল টার্গেট। চক্রটি রাজধানীর মুগদা, শাহবাগ, রমনা, শেরেবাংলা নগর, মিরপুর, মহাখালী এলাকায় প্রতারণা চালিয়ে যেত। এভাবে চক্রটি দুই শতাধিক বিদেশগামীকে প্রতারিত করেছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও এসএমএসের মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠাত বিদেশগামীদের। তাতে লেখা থাকত, ‘যারা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিন্তু এসএমএস পাইতেছেন না, তাদের এক দিনে টিকা নিয়ে দেওয়া যাবে। যারা নতুন তাদের চার দিনের মধ্যে টিকা নিয়ে দেওয়া যাবে।’ র‌্যাব কর্মকর্তা আল মঈন বলেন, নুরুল হক ২০১৮ সালে প্রবাস থেকে দেশে ফিরে ভিসা জটিলতায় আর যেতে পারেননি। ইমরান হোসেন একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করেন। সাইফুল ইসলাম রমনা এলাকার চা-বিক্রেতা। তিনি একটি সরকারি সংস্থায় আউটসোর্সিং হিসেবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ছিলেন। ওই সময় ফরম পূরণের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চাকরিচ্যুত হন। দুলাল মিয়া একটি হাসপাতালের আউটসোর্সিং চালক হিসেবে কর্মরত। টাকা দিয়ে যারা টিকা পাননি তাদের সংখ্যা দুই শতাধিক। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুজন সরকারি প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত থাকার সুবাদে কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে পরিচয় ছিল। প্রতারকদের কাছ থেকে দু-তিনজনের তথ্য পেয়েছি। যাদের মাধ্যমে হয়তো ১০-১৫টি ম্যাসেজ তারা পাঠাতে পেরেছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর