বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিদায়ের আগে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে এমন কোনো সংশোধনী না করার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। তিনি বলেছেন, আরপিওতে গুরুতপূর্ণ কোনো সংশোধনী থাকলে তা করা যেতে পারে। বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে এমন কোনো সংশোধনী না করাই ভালো। তবে সব ঋণখেলাপির জন্য যদি একই সময় দেওয়া হয়, তা ভালোই হবে। গতকাল বর্তমান নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীর প্রস্তাব নিয়ে আলাপকালে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন। সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আইন সংশোধনীর কাজ তারা আগে করলেই পারতেন। শেষ মুহূর্তে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করা ঠিক হবে না। তবে তারা শেষদিকে যদি সব ঋণখেলাপির জন্য একই সময় দেওয়ার বিষয়টি সংশোধন করতে পারেন, তবে খারাপ হবে না। নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধিত দলগুলো কোনো কাজ করেনি। আরও ১০ বছর সময় দেওয়া হলে দলগুলো হালকাভাবে নেবে। এক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ বছরের বেশি সময় দেওয়া ঠিক হবে না। অনলাইন ব্যালটের বিষয়ে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে এটা না করাই ভালো। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার মাধ্যমে এটা করা দরকার। পোস্টাল ব্যালটের পাশাপাশি অনলাইন ব্যালট করতে গেলে সেখানে কারচুপির সুযোগ থাকে কি না? সে বিষয়ে পরীক্ষা করতে হবে। এই বিষয়ে পাইলোটিং না করে হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো বলে মনে করেন তিনি। উল্লেখ্য, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আছে সাড়ে তিন মাস। আগামী বছরের ১৫ ফেব্রয়ারি তাদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ১০টি সংশোধনী আনার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে এই ইসি। গত সোমবার নির্বাচন কমিশনাররা এ বিষয়ে বৈঠক করেছেন। তাতে আরপিওতে ১০টি ধারায় সংশোধনী আনার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে আছে ক্ষুদ্র ঋণ ও বিল খেলাপিদের বিল পরিশোধে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত সময় দেওয়া, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে সময় আরও ১০ বছর বাড়ানো, নিবন্ধনের জন্য সংশোধিত গঠনতন্ত্র ৩০ দিনের মধ্যে জমা দেওয়া, নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের পাশাপাশি শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের পোস্টাল ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা ইত্যাদি। এ ছাড়া পোস্টাল ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন অনলাইনভিত্তিক করারও প্রস্তাব রয়েছে।