শিরোনাম
বুধবার, ১০ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ক্ষতিগ্রস্ত ই-গ্রাহকের টাকা ফেরতে জটিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষতিগ্রস্ত ই-গ্রাহকের টাকা ফেরতে জটিলতা

যেসব গ্রাহক অনলাইনে অর্ডার দিয়েও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের পণ্য পাননি, মামলার কারণে তাদের আটকে থাকা অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগে চিঠি দিলেও এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিচ্ছে। জানা গেছে, প্রতারক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অর্থ উদ্ধারে মামলা করেছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। ওই মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলার কারণে এ মুহূর্তে আইনি মতামত ছাড়া কোনো টাকা ছাড় করা উচিত হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সূত্র জানান, বিষয়টি সমাধানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গে একটি সভাও করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ওই সভায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অর্থ ফেরতের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি প্রতিবেদন দিতে মন্ত্রিপরিষদ যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করে দিয়েছিল ওই কমিটি গতকাল এক সভায় প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত করেছে। সভা শেষে কমিটির প্রধান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত হয়েছে, এখন এটি কেবিনেটে পাঠানো হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সফিকুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘৩০ জুনের পর যারা অর্ডার দিয়েছেন এমন গ্রাহকদের ২১৪ কোটি টাকা এসক্রো সার্ভিসে আটকে আছে। সে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আমরা জননিরাপত্তা বিভাগ ও সিআইডিকে চিঠি দিয়েছিলাম।’

কমিটির প্রধান বলেন, ‘টাকাটা কীভাবে ফেরত দেওয়া হবে এ বিষয়ে কেবিনেট সেক্রেটারি একটি মিটিং করেছেন। সিআইডিসহ বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতিতে সেখানে আলোচনা হয়েছে এ টাকার একটি বড় অংশ মামলা-মোকদ্দমার মধ্যে আটকে আছে, সে বিষয়ে একটি আইনি মতামত দরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছি। মতামত পেলে মামলার বাইরে যে টাকা রয়েছে তা আমরা ফেরত দেব।’

আটকে থাকা টাকা কবে নাগাদ ফেরত দেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে সফিকুজ্জামান বলেন, ‘টাকাটা ফ্রিজ করে রেখেছে সিআইডি। এ কারণেই টাকাটা আটকে আছে। নইলে টাকাটা বের হয়ে যেত। এর সঙ্গে যেহেতু মামলার বিষয় আছে তাই সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ একটা গ্রুপ কাজ করছে টাকাটা কীভাবে ফেরত দেওয়া যায়। এর জন্য দু-এক দিনের মধ্যে হয়তো আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়া যাবে। আইনি মতামত পেলেই আমরা টাকাটা ছাড় করার ব্যবস্থা করব।’ তিনি বলেন, ‘অনেকেই কিন্তু সার্ভিস প্রোডাক্ট পেয়ে গেছেন, ফলে ওই টাকাটা কোম্পানি পাবে। আর যেসব ভোক্তা পণ্য পাননি তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ রয়েছে : ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মন্ত্রিপরিষদের গঠিত কমিটি যেসব সুপারিশ করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর থেকে নিবন্ধন নিতে হবে; যে কোনো ক্রেতার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পর সাত থেকে পনের দিনের মধ্যে সুনির্দিষ্ট পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে; ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর নিতে হবে; ক্রেতা আকর্ষণে লটারি ও লোভনীয় অফার দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। ই-কমার্স পণ্যের মডেল হতে হলে তারকাদের সরকারি অনুমোদন নিতে হবে। নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের বাইরে মডেল হলে দায়দায়িত্ব তারকাদের নিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর