শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
আইওএমের বার্ষিক প্রতিবেদন

অভিবাসী প্রেরণে বাংলাদেশ ষষ্ঠ রেমিট্যান্সে অষ্টম

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

অভিবাসী প্রেরণে বিশ্বে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বাংলাদেশে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে গত দুই বছরে বিশ্বব্যাপী অভিবাসন খাতের পরিসংখ্যানের পাশাপাশি অভিবাসনের বিভিন্ন কারণ তুলে ধরা হয়। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিপর্যয়, সংঘাত ও সহিংসতার কারণে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী বসবাস করা বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৭ দশমিক ৪০ মিলিয়ন। বাংলাদেশের বাইরে বসবাস করেও প্রবাসীরা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশি অভিবাসীরা ২০১৯ সালে ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি দেশে পাঠিয়েছেন, যার মধ্যে ৭৩ শতাংশ প্রবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে এসেছে। তারা গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) দেশগুলোতে প্রধানত ‘নিম্ন-দক্ষ’ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এই রেমিট্যান্সগুলো জিডিপির ৬ শতাংশের বেশি এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক আয়ের উৎস। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোয় উদ্বুদ্ধ করার জন্য নীতিনির্ধারকদের নেওয়া ব্যবস্থার ফলে এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯ সালে নগদ প্রণোদনা স্কিমের সর্বোচ্চ সীমা তিন গুণেরও বেশি বাড়িয়েছে, যার ফলে রেমিট্যান্স সুবিধাভোগীরা আনুষ্ঠানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে টাকা পাঠানোর ওপর ২ শতাংশ বোনাস পান ৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত। এ ছাড়া, রেমিট্যান্স পাঠানোর উৎসাহ আরও বাড়াতে কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক অতিরিক্ত ১ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান করেছে। আইওএম বাংলাদেশের অফিসার ইনচার্জ ফাতিমা নুসরাত গাজ্জালি বলেন, রেমিট্যান্সের প্রবাহের ওপর কভিড-১৯ অতিমারীর নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও, ২০২০ সালে ২১ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে। অভিবাসন বাংলাদেশের উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। অভিবাসীরা উন্নত অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য অভিবাসন করেন এবং তারপর নিজ দেশে জীবনযাত্রার মান বাড়াতে সহায়তা করেন।

 বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী আকাশপথে যাত্রী সংখ্যা ৬০ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালে যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন, যা ২০২০ সালে ১ দশমিক ৮ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে দুর্যোগ, সংঘাত ও সহিংসতার ফলে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির সংখ্যা বেড়ে ৪০ দশমিক ৫ মিলিয়ন হয়েছে, যা এক বছর আগে ছিল ৩১ দশমিক ৫ মিলিয়ন। এ সম্পর্কে প্রতিবেদন সম্পর্কে আইওএমের মহাপরিচালক অ্যান্টোনিও ভিটোরিনো বলেন, আমরা একটি বৈপরীত্য লক্ষ্য করছি, যা মানব ইতিহাসে আগে দেখা যায়নি। কভিড-১৯ এর কারণে শত কোটি মানুষ আটকা পড়েছেন। তারপরও লাখ লাখ বাস্তুচ্যুতির ঘটনায় বিপুল সংখ্যক মানুষ গৃহহীন হতে বাধ্য হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর