শনিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

১১ বছরেও ফেলানী হত্যার বিচার না পেয়ে হতাশ মা-বাবা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১১ বছরেও ন্যায়বিচার পায়নি তার পরিবার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরবেলা ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবা নূর ইসলামের সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিল কিশোরী ফেলানী। কাঁটা তার পার হয়ে আসার সময় ভারতীয় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয় ফেলানী। বাবা নূর ইসলাম প্রাণে বেঁচে গেলেও মেয়ে ফেলানীর মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটা তারে। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয় নিজ বাহিনীর আদালত। ফেলানীর বাবা-মা রায় প্রত্যাখ্যান করলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে ভারত। পরের বছর ২ জুলাই অভিযুক্তকে আবারও নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।

এরপর ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের আশায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যৌথভাবে রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা ও মানবাধিকার সংগঠন সুরক্ষা মঞ্চ। ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করলেও একাধিকবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় এখনো ন্যায়বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার। ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম বলেন, দু-দুবার কুচবিহারে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ণনা দিয়েছি। তারপরও ন্যায়বিচার পাইনি। তবে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা ছাড়িনি।  ফেলানী হত্যাকান্ডে সহযোগী কুড়িগ্রাম পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, একাধিকবার তারিখ বদলের পর ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামানা ও বিচারপতি মোহন এম সান্তনা গৌদ্ধারকে নিয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য আইটেম নম্বর-৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অথচ সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিবাদীকে শোকজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা শোকজের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। বর্তমানে কার্যতালিকা থেকে বাদ পড়ে আছে রিটটি। জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে বাদী ছিল বিএসএফ, আসামি ছিল বিএসএফ এবং বিচারকও ছিল বিএসএফ। ফলে ন্যায়বিচার মেলেনি। সুপ্রিম কোর্টে আশা করা যায় ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।

 

সর্বশেষ খবর