রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বন্দর আছে বাণিজ্য নেই

১৮ পণ্যের অনুমোদন থাকলেও নাকুগাঁও দিয়ে আমদানি হয় একটি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বন্দর আছে। আমদানি-রপ্তানির জন্য শুল্ক অফিসসহ কোয়ারেন্টাইন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর সুবিধাও রয়েছে। নেই কেবল বাণিজ্য। দেশের নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে ১৮টি পণ্য আমদানির অনুমতি থাকলেও আমদানি হচ্ছে মাত্র একটি পণ্য। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেসব পণ্য আমদানির অনুমতি রয়েছে তার বেশির ভাগেরই এ বন্দর দিয়ে আমদানির চাহিদা নেই। ফলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সহজ ও কার্যকর যোগাযোগব্যবস্থা থাকার পরও বন্দরটি অচল পড়ে আছে। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরের চিত্র এটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা, পাথরসহ মোট ১৮টি পণ্য আমদানির অনুমতি রয়েছে। এর মধ্যে পাথর ও কয়লা আমদানি করে বন্দরটি সচল ছিল। তবে ভারতের পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে কয়লা আমদানি বন্ধ পাঁচ বছর ধরে। সবেধন নীলমণি হিসেবে ভারত ও ভুটান থেকে পাথর আমদানি হতো এ বন্দর দিয়ে। নানা কারণে তা-ও প্রায় সময়ই ব্যাহত হচ্ছে। রপ্তানি কার্যক্রমও বন্ধ কয়েক বছর ধরে। ফলে নাকুগাঁও স্থলবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম নেই বললেই চলে। সংশ্লিষ্ট বন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান মুকুল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০১৫ সালে নাকুগাঁওকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর ঘোষণা দেওয়ার সময় ভারত থেকে ১৮টি পণ্য আমদানির তালিকাও দেওয়া হয়। এর অধিকাংশ পণ্যই এ বন্দর দিয়ে আমদানিযোগ্য নয়। ওই তালিকার সঙ্গে আরও কিছু নতুন পণ্যের নাম যুক্ত করতে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এ আবেদন জানানো হয়েছে। স্থলবন্দরটি সচল করতে আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি নতুন যেসব পণ্য আমদানির আবেদন জানিয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সুপারি, পশুখাদ্য, খইল, শুঁটকি, ফেব্রিক্স, চাল, ভুট্টা, জিরা, চকলেট, কসমেটিক্স, জুতা, হাঁস-মুরগি, ফুলঝাড়ু ও জিপসাম। মুস্তাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, বর্তমানে এ বন্দর দিয়ে মাছের পোনা, গবাদি পশু, গাছগাছড়া, বীজ, গম, রাসায়নিক সার ও পিঁয়াজ, মরিচ আমদানির অনুমতি রয়েছে। কিন্তু এ বন্দরটি মেঘালয় ও আসামের কাছাকাছি হওয়ায় এসব পণ্য এদিক দিয়ে আসে না। আমদানি করাও ব্যয়বহুল। এ বন্দর দিয়ে এমন পণ্য আমদানির সুযোগ দিতে হবে যেগুলো মেঘালয় ও আসামে পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থলবন্দর থেকে মাত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরে আসামে এশিয়ার বৃহত্তম শুঁটকি মার্কেট। ওপাশে মেঘালয় সীমান্ত থাকায় প্রচুর সুপারি আমদানিও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হবে। বন্দরটি সচলে সরকারের উচিত খৈলসহ এসব পণ্য আমদানির সুযোগ তৈরি করা। উপরন্তু ভুটানের সঙ্গে বন্দরটির সংযোগ সম্ভাবনা থাকায় আমদানির পাশাপাশি রপ্তানির সম্ভাবনাও কাজে লাগাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

ময়মনসিংহ বিভাগের ডেপুটি কাস্টমস কমিশনার সুশান্ত পাল বলেন, স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি কিছুদিন আগে নতুন পণ্য আমদানির অনুমতি চেয়ে একটি আবেদনপত্র পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আবেদনটি এনবিআরের কাস্টমস কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আমদানি পণ্য অনুমোদনের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার এনবিআরের। সংস্থাটি এ বিষয়ে এসআরও জারি করলে ব্যবসায়ীরা নতুন পণ্য আমদানির সুযোগ পাবেন বলে তিনি জানান।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর