গতকাল ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা, স্মৃতিচারণা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, নাচ, গান, নাটক ও আবৃত্তিসহ নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিবসটি পালন করেছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরা।
শিল্পকলা একাডেমি : সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনায় বক্তৃতা করেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নাট্যজন আতাউর রহমান। এরপর সাংস্কৃতিক পর্ব।
দিনটিকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগীর পাঁচটি স্থানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া সকালে মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে জাতির পিতার প্রতিকৃতি এবং ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সব স্তরের কর্মকর্তা, শিল্পী ও কর্মচারীরা।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি সৌধে আর্টক্যাম্পের আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি। দুপুর ২টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে সমাধি প্রাঙ্গণে আর্টক্যাম্প শুরু হবে। আর্টক্যাম্পের উদ্বোধন করবেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট : দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মোমবাতি প্রজ্বালন করেছে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট।
লাল জমিন : দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একক নাটক মঞ্চায়ন করেছে শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটার। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। নাটকটি মান্নান হীরা রচিত ও নির্দেশিত।
বাংলা একাডেমি : সকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন (অর্ধনমিত) করার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস স্মরণে দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু করে বাংলা একাডেমি। একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার নেতৃত্বে সকালে ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে এবং বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান, পরিচালক, উপপরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সাড়ে ১২টায় বাংলা একাডেমির প্রধান ফটক থেকে জাতীয় শোক দিবস স্মরণে অসচ্ছল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
বিকালে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের জাতীয় পুরাণ নির্মাণে শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীর অবদান’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ওরিয়েন্টাল ল্যাঙ্গুয়েজেস অ্যান্ড সিভিলাইজেশনস-এর ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক জেরেমি কদ্রন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রাক্তন প্রধান সমন্বয়ক কবি কামাল চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। এ ছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী পালন করেছে।