মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ধোঁয়াশা কাটেনি ২০ দিনেও

সিলেটে তিন প্রবাসীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে আসা পাঁচ সদস্যের পরিবারের মধ্যে বাবা ছেলে আর মেয়ের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ২০ দিনেও ধোঁয়াশা কাটেনি। ময়নাতদন্ত ও রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন এখনো না পাওয়ায় মৃত্যু রহস্য সম্পর্কে সঠিক করে কিছু বলতে পারছে না আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনও।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গত ১২ জুলাই এসেছিলেন দেশে। তারা ঢাকায় অবস্থান করেন এক সপ্তাহ। এরপর ১৮ জুলাই সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর স্কুল রোডের একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। সব চলছিল ঠিকঠাক। কিন্তু দৃশ্যপট বদলে যায় ২৫ জুলাই রাতে। সেদিন রাতের খাবার খেয়ে একটি কক্ষে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঘুমোতে যান রফিকুল। অপর দুটি কক্ষে ছিলেন তাদের স্বজনরা। ২৬ জুলাই সকালে রফিকুল ইসলামদের সাড়াশব্দ না পেয়ে স্বজনরা ‘৯৯৯’-এ কল করেন। পরে ওসমানীনগর থানা পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে পরিবারটির পাঁচ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। তাদের ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম ও ছেলে মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি তিনজনকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ৩ আগস্ট মা হোসনে আরা ও ছেলে সাদিকুল ইসলাম হাসপাতাল ছাড়েন। দুই দিন পর ৫ আগস্ট মারা যান মেয়ে সামিরা ইসলাম।

প্রবাসী পরিবারের এই ট্র্যাজেডি নিয়ে সিলেটে তোলপাড় শুরু হয়। এটা পরিকল্পিত খুন কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। সন্দেহের তীর যায় স্বজনদের দিকে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের কাছ থেকে সন্দেহজনক কিছু পায়নি পুলিশ। পরে খাবারের বিষক্রিয়া কিংবা অন্য কোনো কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না, সেদিকে নজর দেয় পুলিশ। এদিকে গত ৩ আগস্ট প্রবাসী হোসনে আরা বেগম ও তার ছেলে সাদিকুল ইসলাম হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর তাদের সঙ্গে কথা বলেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। তাদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, লোডশেডিংয়ের সময় বাসায় জেনারেটর চালানো হতো। জেনারেটর চালুর পর তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হতো। এ তথ্য জেনে পুলিশও জেনারেটর চালু করে পরিস্থিতি অবলোকন করে। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরাও তখন অস্বস্তি অনুভব করেন। পুলিশ ধারণা করছে, ঘটনার রাতে জেনারেটর দীর্ঘ সময় চালু থাকায় এর ধোঁয়া শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে চলে যায়। ফলে দমবন্ধ হয়ে সবাই অচেতন হয়ে পড়েন। পুলিশ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। তবে খাবারের বিষক্রিয়া হয়েছে কি না- তা জানার জন্য রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রয়োজন। কোনো প্রতিবেদনই আমরা পাইনি। সপ্তাহখানেকের মধ্যে এগুলো পাওয়ার আশা করছি।’

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর