টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি সৎ ও ভালো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কৃত করতে হবে। ঘুষ আদায়সহ বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ব্যক্তিদের কার্যকর জবাবদিহি নিশ্চিত করা না গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ঘোষণা কাগুজে বাঘ হিসেবেই থেকে যাবে, উল্টো দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা আরও দুর্বিষহ হতে থাকবে।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সেবা প্রদানে নিয়োজিত কর্মীরা যদি সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালা মান্য করে চলেন, শুদ্ধাচার ও নৈতিকতার চর্চা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর অসংখ্যবার প্রদত্ত নির্দেশ অনুযায়ী নিজেদের জনগণের সেবক বিবেচনা করে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে সেবা খাতের দুর্নীতি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নিয়ন্ত্রিত হবে। এ জন্য অবশ্যই কার্যকর জবাবদিহি ও দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সবার আগে দুর্নীতি প্রতিরোধে সব পর্যায়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও তার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শুদ্ধাচার পুরস্কার দেওয়া বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান ও পরিচয় নির্বিশেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে বিভাগীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমনে টিআইবির প্রতিবেদনে আমরা বেশকিছু সুপারিশ দিয়েছি। সব সেবা ডিজিটালাইজড করলে সেবাগ্রহীতার সঙ্গে সেবাদাতার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ কমবে। তাতে দুর্নীতিও কমবে। এ ছাড়া সব সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে ‘ওয়ান স্টপ’ সার্ভিস চালু ও তার সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সেবা খাতে সেবামূল্য সম্পর্কিত তথ্য হালনাগাদ করে তা দৃষ্টিগোচর স্থানে স্থাপন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কার্যকর করতে হবে, যেখানে সাধারণ সেবাগ্রহীতার সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে। এ ছাড়া সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধির লক্ষ্যে গণশুনানির মতো জনগণের অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিরসন প্রক্রিয়া (জিআরএস) সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য সামাজিক আন্দোলনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। যেসব খাতে জনবল, অবকাঠামো ও লজিস্টিকসের কারণে সেবাদান ব্যাহত হয়, সেসব খাতে বিদ্যমান ঘাটতি দূর করতে হবে।