বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্ষমতা প্রচারে মারধরের ভিডিও টিকটকে

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরের শিবচরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এরা নিজেদের ক্ষমতার দাপট দেখাতে মারধর করে সেই ভিডিও নিজেরাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। রাহুল গ্যাং নামে পরিচিত একটি চক্র এ ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ। এদিকে রাহুল গ্যাংয়ের সদস্যদের হামলার শিকার হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও আমলে নেয়নি পুলিশ, এমন দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। এ ব্যাপারে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত আবেদনপত্র দেওয়া হয়েছে। রাহুল গ্যাং নামে এ গ্রুপের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এমন একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন কিশোরকে লাঠি দিয়ে মারধর করছে পাঁচ-সাত জনের একটি দল। এ সময় বলতে শোনা যায়, ‘মাঝেমধ্যে নিজেদের হ্যাডাম দেখানোর জন্য এগুলো করা উচিত। রাস্তা থেকে কুত্তা ধইরা এনে বাইড়াইয়া বাইড়াইয়া সাইজ করা উচিত।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৩ অক্টোবর এ দলের কয়েকজন সদস্য সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায়। এ সময় শিবচরের সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসিব মাহমুদ দীপুকে কাদাপানি জড়িয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে তারা দীপুকে ব্যঙ্গবিদ্রপ এবং গালিগালাজ করে। ২৬ অক্টোবর কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে উপশহর এলাকায় গতিরোধ করে পাশে নির্জন জায়গায় নিয়ে লোহার রড দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। দীপুকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

দীপুর অভিযোগ, ‘কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ না থাকা সত্ত্বেও আমাকে মারধর করা হয়েছে। এমনকি যারা আমাকে মারধর করেছে তাদের নামও জানতাম না। পরে রাহুল, ফাহাদ, আবদুল্লাহ, হামজা এ চারজনের নাম জানতে পারি। এ চারজন ছাড়া আরও আট থেকে ১০ জন রাহুল গ্যাং নামে একটি গ্রুপের সদস্য। এরা নিজেদের ক্ষমতা প্রকাশের জন্য টিকটকে ও ফেসবুকে মারধরের ভিডিও দিয়ে থাকে।’

দীপুর বাবা আবুল হোসেন মৃধা বলেন, ‘আমার ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তা এফআইআর করা হয়নি, বরং অভিযোগ দেওয়ায় আমাদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আমাদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার দাবি করছি।’

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর একজন এসআইকে প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর