বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ-পানির অভাবে ইউক্রেনে বিপর্যয়

প্রতিদিন ডেস্ক

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ। শীত শুরু হওয়ায় তারা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না, মিলছে না খাবার পানিও। গত ৩১ অক্টোবর এক দিনের রুশ হামলায় এ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে তুরস্কের অনুরোধে রাশিয়া আবারও ইউক্রেনের সঙ্গে শস্য রপ্তানি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, দ্য ইকোনমিস্ট, এনবিসি নিউজ। খবরে বলা হয়, ৩১ অক্টোবরের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ৪০ শতাংশই অকেজো হয়ে গেছে। জাতীয় বৈদ্যুতিক গ্রিড পরিচালক ইউক্রেনার্গো দেশজুড়ে পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছে। পাশাপাশি গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক উভয় খাতে ইউক্রেনীয়দের বিদ্যুৎ ব্যবহার কমাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। খবরে আরও বলা হয়, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কিয়েভে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ঘরবাড়িতে বিদ্যুৎ ও ৮০ শতাংশ বাসিন্দার কাছে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

যদিও এর বেশিরভাগ ফের সচল হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। তবে রাত হলে দেশটির রাজধানীর বিশাল এলাকা অন্ধকারেই থাকছে। ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা নাফটোগাজের প্রধান দেশবাসীকে তাদের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে ভয়ংকর শীতের’ জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে এরই মধ্যে শীত পড়তে শুরু করেছে।

 রাতের বেলা কিয়েভের তাপমাত্রাও হয়ে উঠছে হিমশীতল। ফলে সারা দেশে উষ্ণায়ন ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ইউক্রেনে এক-তৃতীয়াংশ বা সংখ্যার দিক থেকে ৫০ লক্ষাধিক ঘরবাড়ি শীতে উষ্ণতার জন্য ‘ডিস্ট্রিক্ট হিটিং সিস্টেম’-এর ওপর নির্ভরশীল। এতে প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা বা কাঠ দিয়ে একটি কারখানায় পানি গরম করা হয়। এরপর কয়েক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন বেয়ে  সেই পানি পৌঁছে যায় বাড়ি বাড়ি। কয়েক দশক আগে সোভিয়েত প্রকৌশলীরা তৈরি করেছিলেন এই ব্যবস্থা। কিন্তু এখন এই ব্যবস্থাটি রুশ আক্রমণের মুখে অনেকটাই অরক্ষিত। ইউক্রেনীয়  প্রেসিডেনশিয়াল প্রশাসনের উপপ্রধান কিরিলো টাইমোশেঙ্কো বলেন, রাশিয়া কিয়েভের প্রতিটি উৎপাদনকেন্দ্র ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। তারা সফল হলে রাজধানীর ২০ লাখ বাসিন্দার বেশিরভাগই শীতে জমে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

চুক্তিতে যোগ দিতে রাজি রাশিয়া : জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় করা শস্য রপ্তানি চুক্তিতে ফের যোগ দিতে রাজি হয়েছে রাশিয়া। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এ তথ্য জানিয়েছেন। এই চুক্তির মাধ্যমে কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রপ্তানি করতে পারে ইউক্রেন। তুরস্কের প্রেসিজেন্ট গতকাল জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে ফোনে বলেছেন যে, তারা আগের মতোই চুক্তির কার্যক্রম চালিয়ে যেতে রাজি আছেন।

ইউক্রেনে মার্কিন সেনা : ইউক্রেনের মাটিতে প্রবেশ করেছে আমেরিকার সেনা এবং তারা মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের পক্ষ থেকে পাঠানো অস্ত্র বিতরণের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা গতকাল বার্তা সংস্থা এপি, টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসি এবং পেন্টাগনের প্রেস পুলের কয়েকজন সাংবাদিককে এ কথা জানিয়েছেন। তবে আমেরিকার কতজন সেনা ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে এবং কোথায় তারা কাজ করছে- এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি জানান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গ্যারিক হারমোনের নেতৃত্বে মার্কিন সেনারা ইউক্রেনে কাজ করছে। জেনারেল গ্যারিক হচ্ছেন ইউক্রেনে মার্কিন দূতাবাসের সামরিক অ্যাটাশে।

 

সর্বশেষ খবর