রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ফের তদন্ত হবে গাইবান্ধায়

আরও ৯৪ কেন্দ্রের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ - সিদ্ধান্ত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন পেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম নেই উল্লেখ করে ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনে অনিয়মের ‘খন্ডিত’ তদন্ত প্রতিবেদন হাতে থাকায় ওই ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন এখনই সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পাওয়ার পর ‘সমন্বিত’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিইসি। গতকাল ফরিদপুর-২ উপনির্বাচন পর্যবেক্ষণের মধ্যে তিনি নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘৫১টি কেন্দ্রের তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি; বাকি ৯৪টি কেন্দ্রের তদন্ত প্রতিবেদনও এক সপ্তাহের মধ্যে করতে বলা হয়েছে কমিটিকে।’ গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় পুরো আসনের এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয়  ইসি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অনিয়মের ওই অভিযোগ তদন্ত শেষে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দিয়েছে কমিটি।

ওই তদন্ত প্রতিবেদন ইসির হাতে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘কমিশন সভা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। শনিবার বসে আমরা রিপোর্টগুলো দেখেছি। প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করছি না।’ প্রতিবেদন সম্পন্ন করতে কত দিন সময় লাগতে পারে- প্রশ্নে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন পুরো করে গাইবান্ধা উপনির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরও ৭-১০ দিন সময় লাগবে। সিদ্ধান্ত হচ্ছে বাকি ৯৪টি ভোট কেন্দ্রের পরিস্থিতিও তদন্ত কমিটি পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন দেবে।’

সিইসি বলেন, ‘আমাদের তদন্ত কমিটি সিসি টিভির যে ফুটেজ রয়েছে তা দেখে একটা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন আমাদের কাছে দেবে; এজন্য এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। আগের কমিটি সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিলে টোটাল গাইবান্ধার ওপরে সমন্বিত সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’ একটু সময় প্রয়োজন জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘একটু অপেক্ষা করেন। ৭-১০ দিন সময় লাগবে। খন্ডিত প্রতিবেদন পেয়েছি, পুরোটার তদন্ত প্রতিবেদন দরকার।’ এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল অনিয়মে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমারকে আহ্বায়ক করে ইসির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস সদস্য ও যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরীকে সদস্য সচিব করা হয়। এ ছাড়া কারিগরি কাজে সহায়তার জন্য যুক্ত ছিলেন ইসি সচিবালয়ের আইডিইএ ২ প্রকল্পের স্কোয়াড্রন লিডার মো. শাহরিয়ার আলম। তদন্তকালে কমিটি সব মিলিয়ে ৬২৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ইসির কাছে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন, দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশ রেখেছে কমিটি।

সিসি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ : ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয় গতকাল সকাল ৮টায়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলে। স্থানীয়ভাবে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি এ আসনের সব কেন্দ্র ও ভোটকক্ষ মিলিয়ে ১ হাজার ৫২টি সিসি ক্যামেরায় ভোট দেখেন সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘যেটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল, সিসি ক্যামেরায় দেখলাম শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। সিসি ক্যামেরায় ভোট করা নতুন একটি সংযোজন। যেটা নিয়ন্ত্রণ ও ইলেক্টরাল গভর্ন্যান্সকে আরও বিস্তৃত করবে।’

সর্বশেষ খবর