শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সরষে ভূত থাকলে আস্থা থাকবে না

আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবসে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরষে ভূত থাকলে আস্থা থাকবে না

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আমি দুর্নীতি দমন কমিশনের সব পর্যায়ের কর্মচারীদের অনুরোধ করব, দুর্নীতি দমন কার্যক্রমে তারা যেন সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা প্রদর্শন করেন। সরষের মধ্যে যেন ভূত না থাকে। দুদককে সতর্ক করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরষের মধ্যে ভূত থাকলে দুদকের প্রতি জনগণের আস্থা থাকবে না।

আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবসে গতকাল সকালে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে দুদক আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০২২’ এ পাঠানো ভিডিও বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, দুর্নীতি দূর করতে হলে ধনী-দরিদ্র, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সবাইকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোরদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। দুর্নীতি আর উন্নয়ন একসঙ্গে চলতে পারে না। দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ টেকসই ও গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে আর দুর্নীতি একে বাধাগ্রস্ত করে। ঘুষ, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিকে অসম্মানের চোখে দেখতে হবে। আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহিষ্ণুতা বাস্তবায়ন দেশের সমৃদ্ধি এনে দেবে। দুর্নীতিবাজকে সহায়তা করাও দুর্নীতি। দুর্নীতি দূর করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

দুর্নীতিবাজরা যে দলেরই হোক দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় শাস্তি পেতে হবে, এটি সবার প্রত্যাশা। দুদককে কার্যকর ও সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার বেলায় একই পদক্ষেপ নিতে হবে। ক্ষমতা দেওয়া হয় দায়িত্ব পালনের জন্য, দেখানোর জন্য নয়। তাই দুদকের সব কর্মচারীকে ক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং ক্ষমতার অপপ্রয়োগকে কঠোরভাবে দমন করতে হবে। দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতে হয়, সমাজে এ ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, দুর্নীতি হচ্ছে সামগ্রিক উন্নয়নের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ, যা একটি জাতির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।

সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, জীবনযাত্রার মান উন্নত হলেও সমাজ-রাষ্ট্রে দুর্নীতি বিরাজমান। এতে প্রতীয়মান হয় যে, মানুষ অভাবে নয় বরং লোভ ও স্বভাবগতভাবেই দুর্নীতি করে থাকে। যারা দুর্নীতি করে তাদের মধ্যে কোনো দেশপ্রেম আছে বলে দুদক মনে করে না। সামান্যতম দেশপ্রেম থাকলে কোনো ব্যক্তির পক্ষে দুর্নীতি করা সম্ভব নয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর