বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদ্যুতের দুর্নীতি নিয়ে সমালোচনা সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি পর্যুদস্ত হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে দেশের অর্থনীতি ঠিক আছে, মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে আছে। দেশ এগিয়ে চলেছে। তাই আগামী নির্বাচনে দেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আনবে। এ সময় সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তারা বলেন, ষড়যন্ত্র করে এ উন্নয়নের ধারাকে কেউ টেনে ধরে রাখতে পারবে না।

অন্যদিকে বিরোধী দলের সদস্যরা বলেন, আবারও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়াবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে  সরকারের উচিত ছিল বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি, সিস্টেম লস, অনিয়ম বন্ধ করা। কিন্তু তা না করে বরাবরের মতো সরকার আবারও উল্টো পথে হাঁটল।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে গতকালের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনায় আরও অংশ নেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সরকারি দলের এনামুল হক, মো. আবদুল মজিদ খান, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, মো. মোজাফফর হোসেন, অপরাজিতা হক, এ কে ফজলুল হক, কানিজ ফাতেমা আহমেদ, নাদিরা ইয়াসমিন জলি, জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও সালমা ইসলাম। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। এ সময় তিনি তার মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, শুধু বিদেশগামী নৌরুটে বাংলাদেশের পতাকাবাহী ৯৫টি জাহাজ চলাচল করছে। আগামী বছর তা ১০০টি হবে। কিন্তু যারা উন্নয়ন চোখে দেখে না, তারা বলে উন্নয়ন হচ্ছে না। তারা দেশে সংকট ছাড়া আর কিছু দেখে না। তারা দেশে-বিদেশে নানা অপপ্রচার করছে। কিন্তু আমরা এগুলো কাদের কাছ থেকে শুনছি। খুনি জিয়ার দলের কাছ থেকে। আমরা খুনি জিয়ার দুঃশাসন দেখেছি। তারই ধারাবাহিকতায় এরশাদ, খালেদা জিয়া দুঃশাসন অব্যাহত রেখেছিলেন। এ দেশকে টেনে ধরার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু দেশে স্থিতিশীলতা আছে বলেই আমরা উন্নয়ন করতে পারছি। উন্নয়নের ধারাকে কেউ টেনে ধরে রাখতে পারবে না।

নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশিরা ছোটাছুটি শুরু করেছে : বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, আগামী বছরের শুরুতেই আমাদের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত  হতে পারে। নির্বাচন সামনে রেখে কিছু দূতাবাসের কর্মকর্তা আর তথাকথিত কয়েকটি মোড়ল দেশের প্রতিনিধিরা আমাদের দেশে ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছেন। তারা আমাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার শেখানোর বুলি ছুড়ছেন। কোনো দেশের পরামর্শ বা আদেশ মেনে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পরিচালিত হতে পারে না। আমরা চাই, সাংবিধানিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। আর সে নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক। জনগণ যে দলকে ভোট দেবে সে দল রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবে। এখানে বিদেশিদের নাক গলানোর কিছু নেই। তিনি বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সরকারের সমালোচনা করে বলেন, গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফল মূল্যস্ফীতিকে আরও  উসকে  দিতে পারে।  বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ফলে জনগণের কষ্ট আরও বেড়ে  গেল।

 এমনিতেই নানা অজুহাতে পণ্যমূল্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচসহ সর্বত্র এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আবারও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়াবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে  সরকারের উচিত ছিল বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি, সিস্টেম লস, অনিয়ম বন্ধ করা। কিন্তু তা না করে বরাবরের মতো সরকার আবারও উল্টো পথে হাঁটল।

এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক বলেন, দেশের মানুষকে ভাবতে হবে উন্নয়নের মহাসড়ক মানে শেখ হাসিনা, যার ফল পদ্মা সেতু, মেট্্েরারেলসহ শত শত উন্নয়ন প্রকল্প। আর মির্জা ফখরুলদের দেখানো পথ মানে গুম-খুনের পথ, এতিমের টাকা আত্মসাতের পথ, হাওয়া ভবন বানিয়ে কমিশনের পথ। মানুষ তাই আর মির্জা ফখরুলদের পথে হাঁটবে না। তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নের পথে আছে।

এমপি অপরাজিতা হক বলেন, শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে আমরা কভিড মোকাবিলা করেছি। আর বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী যে মুদ্রাস্ফীতির ঢেউ, তাও প্রধানমন্ত্রী নিজ দূরদর্শিতায় নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর