সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংসদে সরকারদলীয় সদস্যরা

জনগণ শেখ হাসিনাকে লাইফ টাইম প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা বলেছেন, অনেকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলছেন। কিন্তু বিএনপির জন্ম হয় স্বৈরতন্ত্রের মধ্য দিয়ে অসাংবিধানিকভাবে। দলটি  জন্মলগ্ন থেকে সংবিধানবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। তারা জাতীয় পতাকা মানে না, জাতীয় সংগীত মানে না, জাতির পিতা মানে না। তারা দেশবিরোধী অপশক্তি। তারা দেশে-বিদেশে চক্রান্ত চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করেছে। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা আর অন্তরে স্বৈরতন্ত্র। এমন দলের সঙ্গে কিসের ঐক্য? তারা বলেন, বিএনপিকে  দেশের জনগণ ত্যাগ করেছে। জনগণ আজ তাদের পেছনে না থাকায় তারা ঘুরপথে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে লাইফ টাইম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের গতকালের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় এমপিরা এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন। আলোচনায় অংশ নেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, আওয়ামী লীগের এমপি ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, মৃণাল কান্তি দাস, সিমিন হোসেন রিমি, নাহিদ ইজাহার খান, এ বি এম কবিরুল হক,  আহসানুল ইসলাম টিটু,  জিন্নাতুল বাকিরা, রুমানা আলী ও  ফেরদৌস ইসলাম। আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু বলেন, বিএনপি এখন রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলছে। কিন্তু তারা স্বাধীনতা মানে না, সংবিধান মানে না, জাতীয় পতাকা মানে না, জাতীয় সংগীত মানে না, জাতির পিতাকে মানে না। দেশদ্রোহের অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যারা সংবিধান মানে না তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। এই বিএনপি-জামায়াত মিলে গোলাম আযমের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিল। তারা কখনো দেশের স্বাধীনতা চায়নি। এই বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করে। দেশে খুন, ধর্ষণ, জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করে দেশকে পিছিয়ে দেয়, পঙ্গু করে দেয়। তারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে। প্রধানমন্ত্রীর নামে বাজে কথা বলে। তারা দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে অগণতান্ত্রিকভাবে দেশ দখল করতে চায়। বিদেশের কাছে দেশকে পদানত করার চেষ্টা করে। তিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। আমেরিকা, চীনের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি এবং স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমরা বীরের জাতি। তবে মার্কিন জনগণ আমাদের পক্ষে ছিল, তাদের আমি সম্মান জানাই। আজ জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই। দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে লাইফ টাইম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার মতো দেশ তারা যদি আনবিক বোমা বানাতে পারে আমরা কেন পারব না। আমাদেরও আনবিক বোমা বানাতে হবে। মৃণাল কান্তি দাস বলেন, বিএনপি দলটিই আসলে অপশক্তি। দলটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত  চালিয়ে আসছে। ওরা গণতন্ত্র বিকাশের প্রধান অন্তরায়। ওরা উন্নয়নের শত্রু। এদিকে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আনার জন্য কতিপয় বিদেশি দূতাবাস-দেশ আর একশ্রেণির সুশীল সমাজ উঠেপড়ে লেগেছে। ওদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি আর অন্তরে স্বৈরতন্ত্র। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার নীল নকশা বাস্তবায়ন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করে তাদের জঙ্গিবাদী স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা  সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, বিএনপি দলটি একটি আসনের মনোনয়নের জন্য চার-পাঁচজনের কাছ থেকে অর্থ নেয়। তাদের তথাকথিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে এক প্রস্থ টাকা নিয়ে মনোনয়ন দেন, আবার খালেদা জিয়া গুলশানে বসে আরেক প্রস্থ অর্থ নেন, পার্টি অফিসে বসে ফখরুল সাহেবরা আরও কয়েক প্রস্থ অর্থ নিয়ে এক আসনে চার-পাঁচজনকে মনোনয়ন দেন। তারা নেতা-কর্মীদের এভাবে ঠকিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। সে  কারণে বিএনপিকে দেশের জনগণ ত্যাগ করেছে। জনগণ আজ তাদের পেছনে না থাকায় তারা ঘুরপথে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পর পর তৃতীয় বারের মতো ক্ষমতায় আসে। তাঁর সুযোগ্য দেশ পরিচালনায় আমরা উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবতার জননী হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। তিনি মানবতার নেতা, চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থসহ বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাঁরই নেতৃত্বে দেশ  সমুদ্র বিজয় করেছে,  বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইট উৎক্ষেপণ করেছে, মিসাইল নিক্ষেপে পারদর্শিতা দেখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোবল ও সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বৈশি^ক প্রভাবে বিশ্বব্যাপী যে মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে তা সত্ত্বেও  বাংলাদেশ আজ তা সামলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, হচ্ছে। আজ আইএমএফের তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫ নম্বর অর্থনৈতিক দেশ। এ সময় তিনি দুর্যোগ ও  ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন।

সর্বশেষ খবর