সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
শোডাউন এবার ইউনিয়ন পর্যায়ে

তৃণমূলেও চোখ বিএনপির ১১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

তৃণমূলেও চোখ বিএনপির ১১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিসহ ১০ দফা আদায়ে রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি তৃণমূলকেও গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবার তৃণমূলের জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা করবে দলটি। ১১ ফেব্রুয়ারি দেশের সব ইউনিয়ন পর্যায়ে একযোগে যুগপৎ পঞ্চম কর্মসূচি পালিত হবে। এর আগে শনিবার ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটে একযোগে যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি পালিত হয়। ২৪ ডিসেম্বর থেকে জোট বেঁধে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আন্দোলন শুরু করে। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির পাশাপাশি ঢাকায় গণতন্ত্র মঞ্চ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ১২-দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম-পিপলস পার্টি আলাদা আলাদা সমাবেশ করে। এসব দলও ১১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রার অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে। জানা যায়, সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ওই সব সমাবেশের মধ্য দিয়ে তৃণমূলে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির ফের জানান দিতে চায় দলটি। নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সমাবেশগুলোতে সাধারণ মানুষেরও ব্যাপক অংশগ্রহণ ঘটাতে চায়। এ লক্ষ্যে প্রচারের অংশ হিসেবে জেলায় জেলায় লিফলেট বিতরণ করার টার্গেট রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিএনপি দেশ-বিদেশে এই মেসেজ দিতে চায় যে, তাদের আন্দোলনের সঙ্গে দেশবাসীও সম্পৃক্ত হয়েছে। সমাবেশ সফলে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে এরই মধ্যে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সমাবেশ সফলে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির তৃণমূল এখন অনেক শক্তিশালী। সাম্প্রতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে সেটির প্রমাণও দিয়েছে তারা। কিন্তু তাই বলে তো বসে থাকলে চলবে না। কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। নইলে জনগণ মনে করবে, আন্দোলন বাদ দিয়ে তারা হয়তো ঘুমিয়ে গেছে। তিনি বলেন, তৃণমূল শক্তিশালী বলেই নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখতে কর্মসূচি দিতে হচ্ছে। এই সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ জেগেছে। তাদের মানসিক শক্তি দিতে হবে। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তৃণমূল আরও বেশি শক্তিশালী ও চাঙা হচ্ছে। গত বছর ২২ আগস্ট থেকে পর্যায়ক্রমে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তৃণমূলে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। সেসব কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ঘটে। দলটির নেতারা বলছেন, তৃণমূলে সংগঠন শক্তিশালী হওয়ার প্রমাণ এটি। এরপর নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ঢাকায় ৩০ ডিসেম্বর এবং ঢাকার বাইরে ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিল হয়। পঞ্চম কর্মসূচি হিসেবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাংগঠনিক বিভাগগুলোতে সমাবেশ করবে দলটি। এর আগে একই দাবিতে বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখা ২৮, ৩১, ৩০ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তৃণমূলকে চাঙা ও শক্তিশালী রাখতে চায় বিএনপি, যাতে ভবিষ্যৎ কর্মসূচি সফল করা যায়। সে কারণে তৃণমূলে এরই মধ্যে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তৃণমূলের নেতাদের, বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের মূল্যায়ন করতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড। দলীয় সূত্র জানায়, ১১ ফেব্রুয়ারির আগে হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় পদযাত্রা, প্রচারপত্র বিতরণ, পথসভা, হাটসভা, মিছিল ও গণসংযোগ করা হবে। এসব কর্মসূচিতে জেলার অধিবাসী কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক এমপি, বিগত নির্বাচনে দল মনোনীত এমপি প্রার্থী এবং আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য দলীয় এমপি প্রার্থীদেরও থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎ-চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবারের কর্মসূচি হবে ইউনিয়ন পর্যায়ে। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করে লংমার্চের মাধ্যমে পরাজিত করা হবে এ সরকারকে।

সর্বশেষ খবর