বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিক্রির চেয়ে এগিয়ে প্রকাশনা

মোস্তফা মতিহার

বিক্রির চেয়ে এগিয়ে প্রকাশনা

ধীর গতিতে চলছে বইমেলা। প্রথম দিন থেকে মোটামুটি ছন্দে থাকলেও অষ্টম দিনে এসে মেলায় কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে। অন্যবার এমন সময় বিকিকিনি জমে উঠলেও এবারের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। গতকাল বইমেলার অষ্টম দিনে বইপ্রেমীদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। মেলায় দর্শনার্থীও ছিল কয়েকদিনের তুলনায় কম। প্রকাশনার পরিসংখ্যান বলছে, বিক্রির চেয়ে বেশ এগিয়ে আছে প্রকাশনা।

বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল অষ্টম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১১৪টি। আর গত আট দিনে মেলায় মোট নতুন বই এসেছে ৬৪২টি। এর মধ্যে গল্পের বই ৬০টি, প্রবন্ধ ৩৬টি, কবিতার বই ১৬৮টি, গবেষণা ১১টি, জীবনী ৩৪টি, রচনাবলি ছয়টি, নাটক ছয়টি, বিজ্ঞান ১৪টি, রাজনীতি ছয়টি, অনুবাদ ১১টি, ছড়ার বই নয়টি, শিশুসাহিত্য ২১টি, মুক্তিযুদ্ধের বই ১৭টি, ভ্রমণ ১৫টি, ইতিহাস ২৪টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য পাঁচটি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ছয়টি, রম্য/ধাঁধা দুটি, ধর্মীয় ১০টি, সায়েন্স ফিকশন সাতটি ও অন্যান্য ৬৪টি।

প্রকাশকরা বলছেন, প্রকাশনার দিক থেকে মেলার গতি ঠিক থাকলেও বইয়ের বিকিকিনি ঠিক তার উল্টো। হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ প্রকাশকই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিস্তীর্ণ প্রান্তরে অলস সময় কাটাচ্ছেন। প্যাভিলিয়নগুলো ছাড়া স্টলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই বললেই চলে। এদিকে ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে জোনাকী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মঞ্জুর হোসেন বলেন, আমাদের বিক্রি এমনিতেই কম। ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাপোর্টও আমরা পাচ্ছি না। সবগুলো টেলিভিশন প্রতিদিন হাতেগোনা অল্প কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের নিউজই করে আর তাদের ফুটেজই দেখায়। আমরা মুখিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অত বড় প্রকাশক নই বলে ইলেকট্রনিকস মিডিয়া আমাদের এড়িয়ে চলে। আমাদের কথা হচ্ছে তাদের পাশাপাশি আমাদেরও কিছুটা সাপোর্ট দিক। আর প্রতিদিন একই ধরনের প্রকাশকদের সাপোর্ট দেওয়াটা সাংবাদিকতার কোন ইথিকসে পড়ে সেটা আমার জানা নেই। বড়দের এমনিতেই সবাই চেনে ও তাদের দোকানে ভিড় এমনিতেই থাকে আর মিডিয়ার সাপোর্টটাও তারা বেশি পায়। আমি আশা করছি এখন থেকে ইলেকট্রনিকস মিডিয়া সব প্রকাশককেই সাপোর্ট দেবে। যে জীবন আমার ছিল : জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের নতুন বই ‘যে জীবন আমার ছিল’ মেলায় এসেছে। এ বই এক অর্থে ইমদাদুল হক মিলনের আত্মজীবনী, আরেক অর্থে স্মৃতিকথা। জীবনের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা বহু স্মৃতির আনাগোনা এ লেখায়। লেখক জীবনের শুরু থেকে যেসব মানুষের আদর, স্নেহ আর ভালোবাসা পেয়েছেন, যেসব বড় লেখক-কবির স্নেহে ধন্য হয়েছেন সেই সব মানুষ নিয়ে ‘যে জীবন আমার ছিল’। ফাগুন দিনের গোধূলিবেলার মতো মায়াময় ভাষায় লেখা এ বই।

বইটি প্রকাশ করেছে ‘অনন্যা’। প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ। দাম : ৫৫০ টাকা।

ইসমাইল হোসেন ইসমীর ‘রক্তাক্ত ভালোবাসা’ : অনন্যা প্রকাশনী থেকে মেলায় এসেছে ইসমাইল হোসেন ইসমীর উপন্যাস ‘রক্তাক্ত ভালোবাসা’।

ত্রিভুজ প্রেমের সঙ্গে মনোজাগতিক বিশ্লেষণধর্মী এ উপন্যাসটি এরই মধ্যে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭৫ টাকা।

মূল মঞ্চ : বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : ওস্তাদ আলি আকবর খান’ শীর্ষক আলোচনা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইম রানা। আলোচনায় অংশ নেন কমল খালিদ এবং আলী এফ এম রেজওয়ান। সভাপতিত্ব করেন শেখ সাদী খান।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মাকিদ হায়দার, জাহিদ হায়দার ও স্মৃতি আক্তার। আবৃত্তি করেন মো. শাহাদাৎ হোসেন, এনামুল হক বাবু এবং চৈতালী হালদার। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিল্পবৃত্ত’। একক সংগীত পরিবেশন করেন সাইদুর রহমান বয়াতি, আলম দেওয়ান, মমতা দাসী বাউল, মো. আবুল বাশার, ফারজানা আফরিন ইভা, পাগলা বাবলু, মো. আনোয়ার হোসেন এবং সন্ধ্যা রানী দত্ত।

চট্টগ্রামে বইমেলা শুরু : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বইমেলা। গতকাল বিকালে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতার।

 

সর্বশেষ খবর