শনিবার, ৬ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন প্রস্তুতি সনদ সংক্রান্ত চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) উৎপাদন প্রস্তুতি সনদ সংক্রান্ত চুক্তি গতকাল স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ প্রটোকল স্বাক্ষরের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের অগ্রযাত্রায় আরও এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রাশিয়ান ফেডারেশনের সাইবেরিয়ান অঞ্চলের রাজধানী নভোসিভিরসক শহরে সে দেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান টিভিইএল-এর দফতরে এ প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। ঐতিহাসিক এই প্রটোকলে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো শৌকত আকবর ও রাশিয়ান ফেডারেশনের পক্ষে এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ ভি ডায়েরি। প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জেনারেল কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী রাশিয়ান ফেডারেশন নির্ধারিত চুক্তির অবিভক্ত অংশ হিসেবেই বাংলাদেশকে ইউরেনিয়াম ৩৬ জ্বালানি নিরাপত্তা দেবে। বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রথম দিন হতে পরবর্তী তিন বছর আলাদা করে জ্বালানির জন্য অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। উভয়ের মধ্যে এই প্রটোকল ও রেডিনেস সনদ স্বাক্ষরের ফলে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও আইএইএ গাইডলাইন এবং রেগুলেটরি রিকয়ারমেন্ট অনুযায়ী ফুয়েল উৎপাদনের আর কোনো প্রতিবন্ধকতা রইল না। প্রটোকল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ান ফেডারেশনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান, প্রকল্পের উপ-পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান, প্রকল্পের অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অলক চক্রবর্তী, নিউক্লিয়ার কাউন্সিলর শুভাশিস সর্দার। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ইউরেনিয়াম আমদানি দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় মাইলফলক। পারমাণবিক এই জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হবে। এ মর্যাদা পাওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করবে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদন শুরু করতে আর কোনো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জও থাকবে না। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নির্দেশনা মেনেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। সূত্রমতে, স্পর্শকাতর এ জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য আইএইএর অনুমোদন ও লাইসেন্সের পাশাপাশি রাশিয়ান ফেডারেশনের রপ্তানি নীতির আলোকে তাদের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জ্বালানি আমদানি করে তা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঠানো হবে। এ জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ সম্পৃক্ত থাকবে আরও অনেক মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর। নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দা তৎপরতা থাকবে।

সর্বশেষ খবর