শিরোনাম
বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড উত্তর ও দক্ষিণের জনপদ, নিহত ২

প্রতিদিন ডেস্ক

দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। রংপুরের পীরগাছা-কাউনিয়া উপজেলায় এক হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কয়েক শ  গাছপালাও উপড়ে গেছে। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও  আদিতমারীতে  ঝড়ের কবলে শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভোলার চরফ্যাশনে ট্রলারডুবিতে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। বরগুনার পাথরঘাটায় কালবৈশাখী মুহূর্তের মধ্যে লন্ডভন্ড করে গেছে কয়েক শ ঘরবাড়ি ও গাছপালা। গাছপালা পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য।

ভোলা : ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় মোশারেফ হোসেন নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন এলাকার মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এতে ট্রলারে থাকা ২৭ জেলের মধ্যে ২৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মোশাররফ হোসেন মশু উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মৃত ছৈয়দ আহম্মেদের ছেলে। সোমবার রাত ১০টার দিকে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মাইনুদ্দিন মৎস্যঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরবর্তী মেঘনায় ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। এ সময় ট্রলারে থাকা জেলেরা লাফিয়ে নদীতে পড়ে আত্মরক্ষা করেন। মোশাররফ হোসেন (৫৫) ট্রলারের কেবিনে থাকায় বের হতে না পেরে মারা যান। এ সময় অন্য ট্রলারের লোকজন তাদের উদ্ধার করেন। শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান পাটোয়রী বলেন, পরিবারের অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত করা হয়নি। এদিকে, গতকাল রাত ৯টায় জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আমবাড়িয়া বাজারে দোকানের ওপর গাছ পড়লে সুজন মিয়া (৩০) নিহত হন।

রংপুর : ঘূর্ণিঝড়ের ছোবলে পীরগাছা-কাউনিয়া উপজেলায় এক হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েক শ গাছপালাও উপড়ে গেছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঝড় বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার। এ সময় বৃৃষ্টি হয় মাত্র দুই মিলিমিটার। পীরগাছা উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী। তিনি বলেন, এর মধ্যে পারুল, ইটাকুমারী ও অন্নদানগর ইউনিয়নে ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সারাই ও শহীদবাদ ইউনিয়নে ঝড়ে বেশ কিছু বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে।

লালমনিরহাট : জেলার কালিগঞ্জ ও  আদিতমারীতে  ঝড়ের কবলে শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে আদিতমারীতে। রবিবার রাতে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের কুটিরপাড়, বালুরবাঁধ, কালিগঞ্জ উপজেলার গোপাল রায় ও রুদ্রেশ্বর এলাকায় ঝড়ে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নীলফামারী : হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে নীলফামারীর বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন। বেশির ভাগ ক্ষতি হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি ও খেতে থাকা বিভিন্ন উঠতি ফসল। দুমড়ে মুচড়ে গেছে গাছপালা। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার পর হঠাৎ শুরু হয় দমকা হাওয়া। টানা ৩০ মিনিট ধরে চলে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আর পাথর। সর্বস্বান্ত হয়ে যায় নীলফামারী সদরের লক্ষীচাপ, টুপামারী ও জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ী, খুটামারাসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষক। এ ছাড়াও দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে পড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গাছ আর বসতবাড়ি।

পাথরঘাটা (বরগুনা) : হঠাৎ ঝড়ে মুহূর্তের মধ্যে লন্ডভন্ড করে গেছে কয়েক শ? ঘরবাড়ি ও গাছপালা। গাছপালা পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। সোমবার রাত ৯টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটায় এ আঘাত হানে। ঝড় ও তুমুল বৃষ্টিতে মৌসুমি ফল আম, লিচু, কলা, মুগডাল, ভুট্টা ও ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পাঁচ মিনিটের ঝড়ের তাণ্ডবে আমড়াতলা, কাকচিড়া, লেমুয়া, হাতেমপুর, টেংরা ও পদ্মা ভাঙনসহ কমপক্ষে ১০ গ্রামের মানুষের ক্ষতি হয়।

 

 

সর্বশেষ খবর