বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিটিএমএর সংবাদ সম্মেলন

বস্ত্র খাতে ক্ষতি ৪৫ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেছেন, দেশের স্পিনিং মিলগুলোর গত ১৫ মাসে (জানুয়ারি ২০২২-মার্চ ২০২৩) প্রায় চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি) আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অস্থিতিশীল মূল্যে তুলা আমদানি, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন ক্ষতি, উৎপাদিত সুতা কম দামে বিক্রি এবং অতিরিক্ত গ্যাস বিল পরিশোধের কারণে এ ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে মিলগুলোকে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় বিটিএমএর সহ-সভাপতি মো. ফজলুল হক, পরিচালক সৈয়দ নুরুল ইসলাম ও বিটিএমএ পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, স্পিনিং মিলগুলো উৎপাদন অব্যাহত রেখে শ্রমিকদের নিয়মিতভাবে বেতন-ভাতাদি পরিশোধসহ ইউটিলিটি বিল দিতে উৎপাদন খরচ অপেক্ষা ১৮ থেকে ২০ ভাগ কম দামে সুতা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এ ছাড়া প্রায় প্রতিটি মিলকে গ্যাস ব্যবহার না করেও বর্ণিত গ্যাস ট্যারিফে গ্যাস বিল পরিশোধ করায় বছরে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত বিল দিতে হয়।

তিনি বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) অনিয়মিত বরাদ্দ, ইডিএফ ঋণের পরিমাণ হ্রাসসহ প্রয়োজনীয় ডলারের অভাবে কাঁচা তুলা আমদানির জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক এলসি না করায় সমস্যা হচ্ছে। গত প্রায় এক বছর ধরে এ তহবিল থেকে সংশ্লিষ্ট মিলের অনুকূলে ঋণ বরাদ্দ অনিয়মিত এবং পর্যায়ক্রমে এ তহবিলের আকার প্রতিটি স্পিনিং মিলের ক্ষেত্রে ৩০ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঋণের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় মিলগুলো তার পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের জন্য যে পরিমাণ কাঁচামাল তথা তুলা আমদানির প্রয়োজন হয় তা করতে পারছে না। অর্থাৎ মিলগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শুধু কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন ক্ষমতার বাইরে থেকে যাচ্ছে। যাতে উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি গভীর চক্রান্তের সম্মুখীন। বর্তমানে পাকিস্তানি কাপড় দেশের শপিং মলগুলোতে অবাধে বিক্রির কারণে স্থানীয় মিলগুলো সংকটে রয়েছে। সরকার ২০৩০ সালে টেক্সটাইল ও ক্লথিং থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে খাতটির এ নাজুক অবস্থা চলতে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না। খোরশেদ আলম নামে এক উদ্যোক্তা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিকদের বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। আমার ৩৭ বছরের শিল্প জীবনে এমন গ্যাসের সংকট দেখা যায়নি। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকে না, এ কারণে আমার একটি ইউনিট বন্ধ, অন্য ইউনিটের ৩৫ শতাংশ কাজ চলছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা ভয়াবহ।’

সর্বশেষ খবর