দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে ঝুঁকি বেড়েই চলেছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। অর্থবিভাগের সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে সংস্থাটি বলছে, রাজস্ব আদায়ে চলছে ধীরগতি। রিজার্ভ পরিস্থিতিও নাজুকতার দিকেই যাচ্ছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়েও নেতিবাচকতা। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ লাগামহীন। মূল্যস্ফীতির চাপ অসহনীয় এবং বাজেট ভর্তুকি কমানোর কথা থাকলেও সরকার তা করতে পারেনি। ফলে ভর্তুকি কমাতে আবারও তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
ঢাকা সফররত সংস্থাটির প্রতিনিধি দল গতকাল অর্থবিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সে বৈঠকে তারা এ তাগিদ দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়ে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে। অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইএমএফের সঙ্গে নানা ইস্যুতে ধারাবাহিক বৈঠক চলছে, যা আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। এরপর তারা ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেবে। তার ওপর নির্ভর করবে নির্ধারিত সময়ে কিস্তি ছাড় হবে কি না।
সূত্র জানায়, সংকটে পড়া রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তহবিল জুগিয়ে সচল রাখে সরকার। কখনো ভর্তুকি, আবার কখনো ধার হিসেবে এ অর্থ দেওয়া হয়। এভাবে অর্থ ঢালতে থাকায় গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ১৩২টি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাওনা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আইএমএফ। সংস্থাটি বলছে, লোকসানি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ভর্তুকি ও ধার সরকারের তহবিল ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। অর্থবিভাগের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানকে ভর্তুকি ও ধার দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে এ প্রতিনিধি দল। এদিকে প্রতি বছরই রাজস্ব ঘাটতিতে থাকে সরকার। রাজস্বের লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় ঋণ নিয়ে বাজেট ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। এ অবস্থার মধ্যেও লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রমাগত অর্থ জোগান দিয়ে আসছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে আইএমএফ।