অনলাইনে পার্ট টাইম জব ও অ্যাপসে লোন দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেওয়ার অভিযোগে চীনা নাগরিকসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. আরিফুল ইসলাম রিফাত, মো. নাজমুল হুদা জাহিদ, শহিদুল ইসলাম শান্ত, বেনজির আহম্মেদ টনী, মো. আবদুর রহমান দিগন্ত ও চীনা নাগরিক জং কি জং। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি মোবাইল ফোন, ২৫৯টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, ৭টি এটিএম কার্ড ও একটি চায়না পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ভাটারা এবং উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল এসব তথ্য জানান সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আশরাফউল্লাহ। তিনি বলেন, ২৯ অক্টোবর মাসুদের (ছদ্মনাম) হোয়াটসঅ্যাপে পার্ট টাইম জব করে দৈনিক ৮ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করার একটি মেসেজ আসে। মাসুদের বর্তমানে কোনো কাজ না থাকায় মেসেজটি সত্য মনে করে লিংকে প্রবেশ করে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ওই মেসেজে দেওয়া লিংকে মাসুদ ক্লিক করে প্রতারকদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন। তখন ‘You first sign up for an account and you will get 60 Taka after sign up’ লেখাটি দেখে মাসুদ আকৃষ্ট হন এবং ওয়েবসাইটে নিজের নাম-ঠিকানাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন। পরে মাসুদকে একটি টেলিগ্রামের লিংক দেওয়া হয় এবং তিনি ওই সাইটের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতারকের সঙ্গে পার্টটাইম জব করার বিষয়ে চ্যাটিং করেন।
মাসুদকে বলা হয় তাদের ওয়েবসাইটে থাকা বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করে পুনরায় একই সাইটে অধিক মূল্যে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যেহেতু একই সাইটে ক্রয়-বিক্রয় এবং ক্রয়কৃত দামের চেয়ে অধিক দামে বিক্রি করতে পারবেন, তাই নিশ্চিত লাভের আশায় মাসুদ ওই সাইটে বিভিন্ন সময়ে ৭০ হাজার ২০০ টাকা দেন। পরবর্তী সময়ে মাসুদকে ৮৭ হাজার ৫৫০ টাকা মূল্যের একটি কার্পেট কেনার জন্য বললে তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন। এই ঘটনায় মাসুদ ডিএমপির কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার তদন্তে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ভাটারা এবং উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চীনা নাগরিকসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসব অপরাধ থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয় সম্পর্কে ডিবির সাইবার কর্মকর্তা আশরাফউল্লাহ বলেন, সহজে লাভ করা যায়- এমন মেসেজে এড়িয়ে চলা; লোভনীয় প্রস্তাবের কোনো মেসেজ এলে দেখেশুনে মেসেজের উত্তর দেওয়া; মেসেজে আসা লিংকে প্রবেশ না করা; টাকা পাঠানো বা ঢাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া এবং প্রতারিত হলে আইনের আশ্রয় নেওয়া উচিত।
