নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইসলামগাঁথী তিন গম্বুজ মসজিদ। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইসলামগাঁথী গ্রামে আত্রাই নদের তীরে অবস্থিত মসজিদটি স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। মসজিদের পাশেই আছে কারুকার্যখচিত একটি মঠ। প্রত্যন্ত গ্রামে প্রাচীন এই স্থাপনা দুটি অনেকটা দৃষ্টির আড়ালে পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে স্থাপনা দুটি। পুরোনো এই মসজিদ ও মঠের স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। এগুলো ঠিক কত সালে বা কে নির্মাণ করেছিলেন, এ সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জেলা তথ্য বাতায়ন ও উপজেলা তথ্য বাতায়নেও এই মসজিদ ও মঠ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেই।
বাংলাপিডিয়ার তথ্যমতে, মসজিদটি সপ্তদশ শতাব্দীতে মোগল আমলে নির্মিত। সুবেদার ইসলাম খানের আমলে (১৬০৮ থেকে ১৬১৩ সাল) স্থাপন করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। মঠটিও একই সময়ে নির্মাণ করা হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, স্থাপনা দুটি এক রাতে জিনেরা নির্মাণ করেন। তাই মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে জিনের মসজিদ নামেও পরিচিত।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৪০০ বছর আগে মসজিদটি নির্মিত হয়। তখন পাশেই প্রায় ৪০ ফুট উঁচু একটি মঠও নির্মাণ করা হয়। মঠটিতে খোদাই করে অঙ্কন করা হয় বিভিন্ন প্রাণীর ছবি। মসজিদের স্থাপত্যশৈলী মধ্যযুগীয় অন্যসব স্থাপনার মতোই। মূল ভবনটি উত্তর-দক্ষিণ লম্বায় ১৭ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে এর দৈর্ঘ্য ৪ হাত।
ছাদের ওপর একই সারিতে আছে তিনটি গম্বুজ। মসজিদে একসঙ্গে ১৬ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। ইসলামগাঁথী গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব করিম প্রামাণিক বলেন, দাদারা ধারণা দিয়েছিলেন, প্রায় ৪০০ বছর আগে এগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। মসজিদের ইমাম আকরাম হোসেন বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটি দেখার জন্য প্রায়ই দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, শুনেছি মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য মসজিদ ও মঠ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোগল স্থাপনা দুটি সংরক্ষণে প্রশাসনের ভূমিকা পালন করা উচিত।