‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’ ২০২১ সালে এমন একটি লেখায় দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছিল। প্রায় চার বছর পর আবারও অভিন্ন লেখা ‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’ সর্বত্র ঘুরছে। লেখাটি সবার হৃদয়কে নাড়া দেওয়ার মতো। ফলে আবারও চলছে আলোচনা।
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহাদি জে আকিব মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছিলেন। দুই দিন পর তার মাথায় অপারেশন করা হয়। তখনো মাথার খুলি রেখে দিয়ে ধবধবে সাদা ব্যান্ডেজের ওপর লিখে দেওয়া হয়েছিল ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না।’ পরে তিনি সুস্থ হয়েছিলেন। প্রায় চার বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন চবি সমাজতত্ত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া (২৪)। তার মাথার খুলি রেখে অপারেশন করা হয়। তবে এখন সুস্থ হলেও মাথার খুলিটি প্রতিস্থাপন করতে মাস দেড়েক সময় লাগবে। বর্তমানে তিনি পার্কভিউ হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন।
অন্যদিকে, একই ঘটনায় মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত চবির আন্তর্জাতিক বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমের (২৪) অবস্থা আশঙ্কাজনক। পাঁচ দিন পার হলেও এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি। তবে সাপোর্ট ছাড়া প্রেশার মাপা যায়। গত বুধবার জ্ঞানের লেভেল আট থাকলেও গতকাল ছিল সাত। হাত-পা নাড়াচাড়া করতে পারছে। মাথায় জমাটবাঁধা রক্তের অবস্থা জানার জন্য গতকাল তৃতীয়বারের মতো সিটি স্ক্যান করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার সায়েমের চিকিৎসায় পার্কভিউ হাসপাতালে দুজন নিউরো সার্জন, একজন নিউরো মেডিসিন, একজন মেডিসিন, একজন অর্থোপেডিক ও একজন আইসিইউ বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। সায়েমের বাড়ি কুমিল্লায়। তার পরিবার থাকে বগুড়ায়। ছেলে আহত হওয়ার খবর পেয়ে সেখান থেকে গত সোমবার সকালে তার বাবা আমির হোসেন ও মা শাহনাজ আমিন চট্টগ্রামে আসেন। পার্কভিউ হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সায়েমের মাথায় রক্ত জমাটের অবস্থা দেখতে গতকাল তৃতীয়বারের মতো সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার জ্ঞান ফিরেনি। অপরদিকে, মামুন এখন অনেকটাই সুস্থ, কথা বলতে পারছেন। প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চবির অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের চবির ৮টি বাস ও ৯টি অ্যাম্বুলেন্সে করে চমেক হাসপাতালসহ নগরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।