দুবাইয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর (৫৬) বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পাচার করা ওই অর্থ দিয়ে দুবাইয়ে ২২৬টি ফ্ল্যাট ক্রয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপনা এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ ও পরিচালনার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে সিআইডি। অর্থ পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে গতকাল সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী রুকমীলা জামানসহ অজ্ঞাতনামা পাঁচ-সাতজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি থানায় সিআইডি বাদী হয়ে নিয়মিত মামলা দায়ের করে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ-সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ১২ জানুয়ারি ২০১৪ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। শিল্পপ্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবারের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। অনুসন্ধানকালীন প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল বর্ষা দক্ষিণ-৩, বারশা দক্ষিণ, বারশা দক্ষিণ-৪, থানিয়া-৫, জাদ্দাফ, হাইবা-৬, উপসাগরীয় বাণিজ্যিক, খায়রান, ইয়ালায়েস-২, বুর্জ খলিফা, জাবাল আলী, ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ড, জাবেল-২, মার্সা দুবাই, মে’আইসেম প্রথম, নাদ আল শেবা প্রথম, ওয়াদি আল সাফা-৩-সহ বিভিন্ন স্থানে ২২৬টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। যার মূল্য ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ দিরহাম। এ ছাড়া তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে দুবাইয়ের আল বর্ষা দক্ষিণ-৩ এলাকায় ‘কিউ গার্ডেনস বুটিক রেসিডেন্সেস-ব্লক বি’ নামে দুটি সম্পত্তির তথ্য পাওয়া যায়, যার মূল্য ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ দিরহাম। এ ছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকের দুটি হিসাবসহ মোট চারটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়। ব্যাংক হিসাবগুলোতে বিভিন্ন অঙ্কের দিরহাম ও মার্কিন ডলারের লেনদেন-সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়, যা তৎকালীন সময়ের মুদ্রার বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩১১ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৭৯৫ টাকা। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদ্ঘাটন, অজ্ঞাত অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।