ছাত্র সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বোরকা নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক আ-আল মামুনের মন্তব্যের জেরে উত্তাল হয়েছে ক্যাম্পাস। এ ঘটনায় তার প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি শাস্তির দাবি জানিয়েছে রাকসু প্রতিনিধিরা। এরই মধ্যে পোস্টটি সরিয়ে ফেলেছেন ওই শিক্ষক। ফেসবুকে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। এদিকে ইসলামি পোশাকে ক্লাস নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে আরেক শিক্ষক। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মাঈন উদ্দিন বলেন, রাকসু প্রতিনিধিরা ওই শিক্ষকের বিচার চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। বিষয়টি পর্যালোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাকসু প্রতিনিধিদের দাবি- এই অবমাননাকর ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জন্য আল মামুনকে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে হবে; ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষকতার শপথ, কর্মসংস্কৃতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা লঙ্ঘনের অপরাধে যথাযোগ্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মানসিকতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ সার্বিক নীতিমালা প্রণয়ন; এমন কর্মকাণ্ডে সতর্কতামূলক ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সহিষ্ণুতা, সাম্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জোরদারের লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানানো হয়। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক আ-আল মামুন। তিনি বলেছেন, এ মন্তব্য করা উচিত হয়নি। তাই কিছুক্ষণ পরই সেটা সরিয়ে নিয়েছি। এদিকে ধর্মীয় পোশাক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ‘জ্ব্বুা ও কোরআন’ হাতে ক্লাস নিয়েছেন আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেছেন, শিক্ষকদের সমাজের বিবেক মনে করা হয়।
তাদের কাছ থেকে এমন কাজ প্রত্যাশিত নয়। শুধু বাংলাদেশ কেন বিশ্বের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষক মদ নিয়ে ক্লাসে যাবেন এটার অনুমোদন দেয় না।
আমি তার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিবাদ জানাতে নিজে ইসলামিক পোশাক এবং ধর্মগ্রন্থ নিয়ে ক্লাসে এসেছি। ধর্ম ও ধর্মীয় আচার-আচরণ পালনে সবার সমান স্বাধীনতা আছে। এটা নিয়ে বিতর্ক ছড়ানোর অধিকার কারও নেই। এর আগে, গতকাল রাতে হিজাব ইস্যুতে অধ্যাপক আ-আল মামুন ফেসবুকে রাকসু ও হল সংসদের নারীদের শপথ গ্রহণের বোরকা পরা ছবি দিয়ে লেখেন, ‘এই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আমি এন্ডর্স করছি। কাল আমি এরকম ব্যক্তিগত স্বাধীনতা পরে ও হাতে নিয়ে ক্লাসে যাব। পরব টু-কোয়ার্টার, আর হাতে থাকবে মদের বোতল। মদ তো ড্রাগ না! মদ পান করার লাইসেন্সও আমার আছে! শিবির আইসেন, সাংবাদিকরাও আইসেন!’ (কিছুক্ষণ পর সেটাই তিনি সরিয়ে নেন।) বিতর্কিত এ মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। রাতেই বিক্ষোভ করে তার বহিষ্কার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।