ফলের দোকানে খরে থরে সাজানো হরেক রকম ফল যে কারো নজর কাড়ে। রোগী দেখা, কারও বাসায় বেড়াতে যাওয়া কিংবা নিজের পরিবারের জন্য এসব ফল হরহামেশাই আমরা কিনে নিয়ে যাচ্ছি। এমনকি খাওয়ার পরও বেশ তৃ্প্তির ঢেকুর তুলে মনকে সান্তনা দেই যে, যাক ফল খেলাম। আয়ু বোধহয় কিছুটা বাড়ল। অথচ, আয়ু বাড়া তো দূরের কথা, কিছু ফল খেয়ে নিজের অজান্তেই শরীরের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছি। ডেকে আনছি অকাল মৃত্যু।
যত দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে আমাদের জীবনে কৃত্রিমতা এবং বিভিন্ন রাসায়নিকের ব্যবহার। এমনকি কখনো কখনো তা হয়ে পড়ছে মানুষের মৃত্যুর কারণ। Environmental Working Group প্রতি বছর প্রকাশ করে তাদের “Dirty Dozen” তালিকা। এতে থাকে সেই সব সবজি এবং ফলের নাম যাদের মাঝে থেকে যাওয়া ক্ষতিকর কীটনাশকের পরিমাণ সবচাইতে বেশি। আর এই নিয়ে চতুর্থ বছরের মতো এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে আমাদের অতি পরিচিত, অতি প্রিয় আপেল। হয়ত এখুনি অনেকে ভাবতে শুরু করেছেন যে, আসলেই তো, মাসের পর মাস দোকানো সাজানো থেকেও আপেল কেন পঁচে না।
Environmental Working Group এই তালিকা তৈরি করে USDA এবং Food and Drug Administration এর বিভিন্ন পরীক্ষার তথ্য থেকে। আর এ তালিকায় তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে স্ট্রবেরির নাম। আঙ্গুর রয়েছে এই তালিকার তৃতীয় স্থানে। মাত্র একটি আঙ্গুরেই ১৫ ধরণের কীটনাশক পাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছে সেলেরি নামের এক ধরণের সবজি। সেলেরির সমস্ত নমুনার মাঝে ৬৫ শতাংশের মাঝেই কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিলো। পঞ্চম স্থানে রয়েছে পীচ ফল। নামটি অনেকে শুনে থাকলেও আমাদের অনেকের কাছেই এটি অপরিচিত। অবাক হলেও সত্যি যে, এই তালিকার ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে পালং শাক। আর সেটা বর্তমানে হাইব্রিড প্রজাতির পালং শাকের বিস্তারে কারণেই হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। এই প্রজাতির পালং শাক চাষে যেমন দিতে হয় অতিমাত্রায় সার, তেমনি কিটনাশক। তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে ক্যাপসিকাম বা বেল পেপার। অষ্টম স্থানে রয়েছে পীচের মতোই নেকটারিন নামের একটি ফল। এছাড়া শশায় পাওয়া কিটনাশকের উপস্থিতিও কিছুটা উদ্বেগজনক। ২০১৩ সালের তালিকায় না আসলেও ২০১৪ সালে একাদশ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে মটরশুঁটি। তালিকার শেষ খাদ্যটি হলো আলু। ওজনের বিচারে অন্য যে কোনো কৃষিপণ্যের তুলনায় বেশি কীটনাশক থাকে একটি আলুতে।