ভারতে এবার বন্ধ হতে চলেছে ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন। অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্যান্ডার্ডস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এএসসিআই) সম্প্রতি এক নির্দেশিকা জারি করে বলেছেন, ফেয়ারনেস ক্রিম প্রস্তুতকারী কোনো সংস্থা এমন কোনো বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারবে না যা দিয়ে গায়ের রঙের জন্য বিভেদ তৈরির বিষয়টা স্পষ্ট হয়।
যাদের গায়ের রং কালো তারা জীবনে ব্যর্থ, তারা অবসাদে ভুগছেন কিংবা তারা অসহায় এমনটাও কোনো বিজ্ঞাপনে দেখানো যাবে না। পর্দায় দেখানো যাবে না কোনো পুরুষ বা নারী ক্রিম মেখে ধবধবে ফর্সা হচ্ছেন। কারণ, এই প্রতিশ্রুতি কার্যত মিথ্যা।
মূলত, বেশকিছু ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন পর্যবেক্ষণ করেই এ নির্দেশ দিয়েছে এএসসিআই। টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায় বিখ্যাত ক্রিকেটার ফর্সা হওয়ার ক্রিম মেখে একের পর এক প্রেমিকা জোটাচ্ছেন। কিন্তু কালো রঙের ছেলেটি কোনো প্রেমিকাই জোটাতে পারছেন না। বিজ্ঞাপনের পোস্ট প্রোডাকশনের জাদুতে শ্যামলা গায়ের রঙ হচ্ছে দুধের মত ফর্সা। এতে ব্যক্তির কর্মদক্ষতাকে ছোট করে শুধু গায়ের রংকেই যোগ্যতার মূল চাবিকাঠি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অথচ, বিশ্বের অনেক নামি দামি তারকা, সফল ব্যক্তি কৃষ্ণাঙ্গ। বিশ্বকাপ ফুটবলেও নামবে একঝাক কালো রংয়ের মানুষ যারা জীবনে সফল এবং এদের অধিকাংশের প্রেমিকা শ্বেতাঙ্গী।
এদিকে এএসসিআই এর নতুন এই নির্দেশকার ফলে প্রায় দেশটির তিন হাজার কোটি টাকার ফেয়ারনেস ইন্ডাস্ট্রির উপরে খাঁড়া নেমে আসতে চলেছে।
এ ব্যাপারে এএসসিআই এর সাবেক চেয়ারম্যান সাম বালসারার বক্তব্য, নতুন নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে, বিজ্ঞাপন এমন হওয়া উচিত যা সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। বর্তমানে যেসব বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে, তা সেই শর্ত পূরণ করে না।
এদিকে, গত কয়েক দশক ধরেই এই ফর্সা হওয়ার ক্রিমের মোহময়ী বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছেন বেশ কিছু সমাজকর্মী ও সেলিব্রিটি। চিত্রপরিচালক শেখর কাপুর তাদের মধ্যে অন্যতম। অভিনেত্রী ও চিত্রপরিচালক নন্দিতা দাসও ‘ডার্ক ইস বিউটিফুল’ বলে এই ফেয়ারনেস ক্রিম বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।